৪২তম আসরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননায় ভূষিত ৪জন
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে কিংবদন্তী অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কারের মাধ্যমে শুরু হয় ২০১৭ ও ২০১৮ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান। এরপর আজীবন সম্মাননা পান আর এক কিংবদন্তী নায়ক আলমগীর ছাড়াও প্রবীর মিত্র ও সুজাতা ।
মোট ২৭ ও ২৮ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশি চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য সর্বোচ্চ স্বীকৃতী ছিল এই পুরস্কার। গতকাল ৮ নভেম্বর বিকেলে সেই আনন্দঘন মুহুর্তের সূচনা হয়। এটি ছিল ৪২ তম আসর।
পুরস্কার প্রদান শেষে প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব বিজয়ীদেরকে অভিনন্দন জানান। তথ্যমন্ত্রী ও প্রতিপ্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি তার বক্তব্যে দেশের চলচ্চিত্র তথা শিল্প সংস্কৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহ, ভালোবাসা ও অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। আর পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস ও নায়িকা পূর্ণিমা।
প্রধানমন্ত্রী একে একে সবার হাতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিয়ে বেশকিছু সময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।
২০১৭ সালের সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ এবং ২০১৮ সালের সেরা ছবি ‘পুত্র’। ২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ঢাকা অ্যাটাকের জন্য আরেফিন শুভ এবং সত্তা ছবির জন্য শাকিব খান।
অপরদিকে সেরা অভিনেত্রী ২০১৭ সালে ‘হালদা’ ছবির জন্য নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং ২০১৮ সালে ‘দেবী’ ছবির জন্য জয়া আহসান।
তবে এই দুই ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ও ‘পুত্র’ ছবির পরিচালকদের কেউই সেরা পরিচালক হিসেবে পুরস্কার পায়নি। কিন্তু ২০১৭ সালে ‘গহীন বালুচর’ ছবির জন্য সেরা পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন বদরুল আনাম সৌদ। ২০১৮ সালের সেরা পরিচালক ‘জান্নাত’ ছবির জন্য মোস্তাফিজুর রহমান মানিক।
২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ‘পুত্র’ সিনেমার জন্য ফেরদৌস ও ‘জান্নাত’ সিনেমার জন্য সাইমন সাদিক। সেরা অভিনেত্রী জয়া আহসান।
এছাড়াও শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পেয়েছেন রুনা লায়লা ও বাপ্পা মজুমদার। ২০১৮ সালের ‘একটি সিনেমার গল্প’ ছবিতে ‘গল্প কথার ঐ’ গানটির জন্য রুনা লায়লা ও ২০১৭ সালের সত্তা সিনেমায় জেমসের গাওয়া ‘না জানি কোন অপরাধে’ গানটির সুরকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন বাপ্পা মজুমদার।
এছাড়াও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্রে, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রে, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে, শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী, শিশু শিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক, শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক, শ্রেষ্ঠ গায়ক, শ্রেষ্ঠ গায়িকা, শ্রেষ্ঠ গীতিকার, শ্রেষ্ঠ সুরকার, শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার, শ্রেষ্ঠ চিত্র নাট্যকার, শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা, শ্রেষ্ঠ সম্পাদক, শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা, শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা/অভিনেত্রী খল চরিত্রে, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা/অভিনেত্রী কৌতুক হিসেবেও পেয়েছেন ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জাতীয় পুরস্কার।
পুরস্কার প্রদান শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা ও নৃত্যশিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম স্বর্ণের একটি পদক, পদকের একটি রেপিস্নকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্তদেরকে দেওয়া হয় ১ লাখ টাকা।