fbpx
হোম অন্যান্য ৪০ শতক জমিতে আড়াই মাসে আয় আড়াই লাখ টাকা
৪০ শতক জমিতে আড়াই মাসে আয় আড়াই লাখ টাকা

৪০ শতক জমিতে আড়াই মাসে আয় আড়াই লাখ টাকা

0

স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন উচ্চমূল্যের সাম্মাম চাষ করে বাজিমাত করেছেন গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের চর গোবরা গ্রামের মো. আইয়ুব আলী শেখ (৫৫)।
কৃষক মো. আইয়ুব শেখ মাত্র ৪০ শতাংশ জমিতে জুন মাসের শুরুতে সাম্মাম চাষ করেন। এখন তিনি খেত থেকে সাম্মাম সংগ্রহ করে বাজারজাত করছেন। চলতি মাসের মধ্যেই তার খেতের সব সাম্মাম বিক্রি শেষ হবে। মাত্র ৭৫ দিনেই তিনি সাম্মাম বিক্রি করে আড়াই লাখ টাকা আয় করবেন বলে জানা গেছে। ইতিমেধ্যে ঐ কৃষক খেত থেকে ১ লাখ টাকার সাম্মাম বিক্রি করেছেন। আরো ২ লাখ টাকার সাম্মাম তিনি বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
গোপালগঞ্জে সাম্মামের বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনার নতুন দিগন্তের দ্বার সূচনা করেছেন মো. আইয়ুব আলী শেখ। তাই সাম্মাম চাষে আগ্রহীরা প্রতিদিন তার খেত পরিদর্শন করছেন । অনেকেই ভবিষ্যতে লাভজনক সাম্মাম চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, সাম্মাম বিদেশি ফল। রসালো খেতে সুস্বাদু। কম মিষ্টির এ ফল পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ। সব বয়সি মানুষের জন্য সাম্মাম উপযোগী। তাই বিশ্বের সর্বত্র এ ফলের কদর রয়েছে।
মো. আইয়ুব আলী শেখের সাম্মাম খেতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গাছে গাছে সাম্মাম ঝুলছে। রক স্টার ও এ্যারোমা সুইট প্রজাতির সাম্মাম ব্যাগিং করে রাখা হয়েছে। আর গোল্ডেন হানি ডিউ জাতের সাম্মাম খোলামেলাভাবে বেড়ে উঠেছে। এ জাতের হলুদ আভা পুরো খেতে নয়নাভিরাম শোভা ছড়াচ্ছে। এখানে গাছের থেকে সাম্মামেরই বেশি দেখা মিলছে। তাই দর্শনার্থীদের সহজেই সাম্মাম চাষে আগ্রহী করতে উত্সাহ দিচ্ছে আদর্শ কৃষক মো. আইয়ুব আলী শেখের এই খেত। এটি দেখে অনেক তরুণ সাম্মাম চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কৃষক মো. আইয়ুব আলী শেখ বলেন, আমি সিঙ্গপুরে চাকরি করতাম। চাকরি ভালো লাগত না। পরে দেশে ফিরে এসে ইউটিউবে সাম্মাম চাষ দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই। তারপর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তারের সহযোগিতা, পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে মালচিং ফিলিং পদ্ধতিতে সাম্মাম চাষ করি। এই পদ্ধতিতে মাটি রস ও গাছের খাদ্য ধরে রাখতে পারে। তাই সারের অপচয় হয় না। এছাড়া ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করেছি। এখানে হলুদ ফ্রেমন ট্রাফ স্থাপন করা হয়েছে। তাই কীটনাশক তেমন প্রয়োগ করতে হয়নি। গত জুনে মাত্র ৪০ শতাংশ জমিতে সাম্মাম চাষাবাদ করি। ৬০ দিনের মাথায় সাম্মাম সংগ্রহ করে বাজারজাত শুরু করেছি। প্রতিটি সাম্মামের ওজন দুই কেজি থেকে সোয়া চার কেজি পর্যন্ত হয়েছে। সাম্মাম চাষে আমার ব্যয় হয়েছে ৫৫ হাজার টাকা। প্রতি কেজি সাম্মাম ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। চলতি মাসের মধ্যেই ৩ লাখ টাকার সাম্মাম বাজারে বিক্রি করতে পারব। এখান থেকে আমি মাত্র ৭৫ দিনেই আড়াই লাখ টাকা লাভ করতে পারব। প্রতিদিন সাম্মাম চাষে আগ্রহীরা আমার বাগান পরিদর্শনে আসছেন। শিক্ষিত বেকার যুবকরা লাভজনক সাম্মাম চাষ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজ কুমার রায় বলেন, মো. আইয়ুব আলী শেখ ৪০ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে রকস্টার ও এ্যারোমা সুইট জাতের ২ হাজার সাম্মামের চারা এবং গোল্ডেন হানিডিউ জাতের ৫০০ সাম্মামের চারা রোপণ করেন। প্রতিটি গাছ থেকে তিনি দুই কেজি থেকে সোয়া চার কেজি সাইজের সাম্মাম ফলন পেয়েছেন। এখান থেকে তিনি কমপক্ষে তিন টন সাম্মামের ফলন পাচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, আমরা আইয়ুব আলীকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি। আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্বতী বৈরাগী ও রাজ কুমার রায় তাকে পরামর্শ দিয়েছে। তিনি মাত্র ৪০ শতাংশ জমিতে সাম্মাম চাষ করে স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। তিনি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার সাম্মাম চাষ দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *