fbpx
হোম রাজনীতি সংলাপ নিয়ে মনে হয় রাষ্ট্রপতিও হ্যাপি না

সংলাপ নিয়ে মনে হয় রাষ্ট্রপতিও হ্যাপি না

0

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি আইন প্রণয়নের কথা জাতীয় সংসদকে বলতে পারেন। সেই সময় এখনো হাতে আছে।

সংলাপ নিয়ে মনে হয় রাষ্ট্রপতি নিজেও ‘হ্যাপি’ না। এ কারণে ইসি গঠনে আইন প্রণয়নেরই তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ভেতরে এখন চরম নিয়ন্ত্রণহীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে।

টাকাপয়সা ও অর্থবিত্তের মালিকরা দলের ভেতরে-বাইরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর বর্তমান সরকার উন্নয়নকে বেশি প্রাধান্য দিতে গিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটাকে অনেকাংশে ম্লান করে দিচ্ছে। তবে মহামারির মধ্যেও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য।

এছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, কমিউনিটি ক্লিনিক, টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণসহ অনেক কাজ সরকার ভালো করেছে। আবার করোনাকালীন স্বাস্থ্য খাতের কঙ্কালসার চেহারাটাও প্রকাশ পেয়েছে। এ খাতে এত অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট, অব্যবস্থাপনা-তা জনগণকে হতাশ করেছে।

দীর্ঘ আলোচনায় রাশেদ খান মেনন নতুন ইসি গঠন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, চলমান রাজনৈতিক সংকট, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অবস্থা, সরকারের তিন বছরের সফলতা-ব্যর্থতাসহ নানা ইস্যুতে কথা বলেন। সোমবার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ মামুনুর রশীদ। এর চুম্বকীয় অংশ নিচে দেওয়া হলো-

রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে আমরা এর আগে দুই রাষ্ট্রপতির তিন দফায় সংলাপে অংশ নিলাম। আশা করিনি এবারও একই ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসতে হবে। ভেবেছিলাম সংবিধানের সুস্পষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী ইসি গঠনে আইন হবে, বিধিবিধান প্রণয়ন হবে। দুঃখজনক, হলো না। আইনটি হলে এই সংলাপের প্রয়োজন হতো না। প্রতি পাঁচ বছর পর সংলাপের নামে একই জিনিস চলতে পারে না। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে একই কথা বারবার বলতে ভালোও লাগে না। আমার তো মনে হয়, রাষ্ট্রপতি নিজেও ‘হ্যাপি’ না। বারবার একই বিষয় নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। তিনি নিজেও বলেছেন, এ নিয়ে বারবার কথা বলতে তার ভালো লাগে না। এ কারণে ইসি গঠনে আইন প্রণয়নেরই তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি আরও বলেন, সংলাপের অতীত অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। এবারের সংলাপের পর রাষ্ট্রপতি কী করবেন, সেটি তার ওপর নির্ভর করবে। ফলাফল কী হবে, তাও বলা যাবে ইসি গঠনের পর, এর আগে নয়। তবে রাষ্ট্রপতি ইসি গঠনের জন্য আইন প্রণয়নের কথা জাতীয় সংসদকে বলতে পারেন। সেই সময় এখনো হাতে আছে। যেমনটা নব্বইয়ের পর দেশ রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় নাকি সংসদীয় গণতন্ত্রে ধাবিত হবে, তা ঠিক করতে জাতীয় সংসদকে বলেছিলেন তৎকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। ইসি গঠনের বিষয়টি ভিন্ন প্রেক্ষাপট হলেও রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদকে বলতে পারেন, সেই ক্ষমতা তার আছে।

প্রবীণ এই বাম নেতা বলেন, রাজনৈতিক দল, সুশীলসমাজের প্রতিনিধিসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আইন চায়। এমনকি ক্ষমতাসীনরাও আইনটি করবেন বলে বারবার আশ্বস্ত করেছেন। তবুও ইসি গঠনে আইনটি আর হলো না। অসুবিধাটা কোথায়, বাধাটা কোথায়-কেউ বলতেও পারছে না। সব মহলের দাবি সত্ত্বেও আইনটি যখন হলোই না, তখন আমরা বলছি সার্চ কমিটিতে যে নামগুলো জমা হবে, সেগুলো জাতীয় সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটিতে পাঠাতে। কার্যউপদেষ্টা কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী আছেন। বিরোধীদলীয় নেতাও আছেন। জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সদস্যরাও আছেন। সবাই এখানে বসে সার্চ কমিটির তালিকা থেকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কারা হবেন, তা ঠিক করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন। এটি হলে অন্তত বিতর্ক অনেকটা কমবে। আর না হলে জন্মলগ্ন থেকে ইসি যে বিতর্কের মধ্য দিয়ে পথ চলছে, সেই বিতর্ক তাদের পিছ ছাড়বে না। রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে তারা আবারও আস্থাহীনতার মুখে পড়বে। নতুন করে সংকটে পড়বে দেশ।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *