লকডাউনকে কেন্দ্র করে আগুন-হামলার ঘটনায় ১ জনের মৃত্যু
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় ‘লকডাউন’ বাস্তবায়ন করতে যাওয়া সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে থাকা এক সরকারি কর্মচারীর লাঠিপেটার অভিযোগকে কেন্দ্র করে আগুন-হামলার ঘটনায় আহত একজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, পুলিশের গুলিতে মৃত্যু ও জনৈক মাওলানা গ্রেপ্তারের গুজব ছড়িয়ে ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী এই তাণ্ডব চালিয়েছে।
গত সোমবার রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ উপজেলা চত্বরে লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রবেশ করে উপজেলা পরিষদ, থানা, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়সহ বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এসি ল্যান্ডের গাড়ি এবং তিনটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। হামলা থেকে রক্ষা পায়নি উপজেলা কমপ্লেক্সের গাছপালা ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ নানা স্থাপনা। তারা ইউএনও, এসি ল্যান্ড এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনেও হামলা চালায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সালথা পুলিশের পাশাপাশি ফরিদপুর, বোয়ালমারী, ভাঙ্গা ও নগরকান্দা থানা পুলিশসহ র্যাব ও আনসার সদস্যরা মাঠে নামেন। তাঁরা ৫৮৮ রাউন্ড শটগানের গুলি (রাবার বুলেট), ৩২ রাউন্ড গ্যাস গান, ২২টি সাউন্ড গ্রেনেড ও ৭৫ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ছোড়ে।
এ সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আট সদস্যসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে স্থানীয় রামকান্তপুরের আশরাফ আলীর ছেলে মাদরাসাছাত্র জোবায়ের (২০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা বাজারে চা খেয়ে নটাখোলা গ্রামের মৃত মোসলেম মোল্লার ছেলে জাকির হোসেন বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় সেখানে নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা পরিদর্শনে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হিরামণি উপস্থিত হন।
জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সহকারী কমিশনারের গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি সজোরে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তাঁর কোমর ভেঙে যায়। জাকিরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বিপিএম বলেন, ‘লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে স্থানীয় জনতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। এতে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে বিভিন্ন অফিস ও বাসভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’