যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত: কিম জং উন
দক্ষিণ কোরিয়াকে ‘নির্মূল’ করার হুমকি দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। আমেরিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে যেকোন সামরিক সংঘাতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য উত্তর কোরিয়া সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতা কিম জং উন।
কোরিয়া যুদ্ধ অবসানের ৬৯তম বার্ষিকীতে দেয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন। খবর- পার্সটুডের
কিম, প্রায় তিন সপ্তাহের মধ্যে জনসমক্ষে তার প্রথম উপস্থিতিতে, মে মাসে রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে তার সবচেয়ে গুরুতর হুমকি দিয়েছেন এবং পিয়ংইয়ংয়ের প্রতি কঠোর অবস্থান নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
উত্তর কোরিয়ার নেতা বলেছেন যে, ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষকে তার জাতির সাথে একটি আত্মঘাতী সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে’, রাজ্যের সরকারি কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে।
কিম জং উন বলেন, আমাদের সামরিক বাহিনী যেকোনো সংকট মোকাবেলার জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত এবং আমাদের দেশের পরমাণু যুদ্ধাস্ত্রও শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। যুদ্ধ অবসানের ৭০ বছর পরে এসেও আমেরিকা দক্ষিণ কোরিয়ারকে সঙ্গে নিয়ে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে বিপজ্জনক ও অবৈধ তৎপরতা চালাচ্ছে। পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নানা চক্রান্ত করে আমেরিকার তার আচরণকে ন্যায্য বলে প্রমাণের চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, সামরিক তৎপরতার নামে আমেরিকা দ্বিমুখী অবস্থান বজায় রেখে চলেছে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মিলে যে বৃহৎ পরিসরের সামরিক মহড়া চালায় তা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মারাত্মক হুমকি এবং উসকানি। এই কারণে দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে এবং সংঘাত ময় এই অবস্থা থেকে ফিরে আসার কোনো পথ নেই।
রাষ্ট্রীয় মিডিয়া অনুসারে, কিম জং উন তার ভাষণে বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো সঙ্কটে সাড়া দেয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। আমাদের দেশের পারমাণবিক যুদ্ধ প্রতিরোধ সক্ষমতাও নির্ভরযোগ্য এবং নির্ভুলভাবে ও তৎক্ষণাৎ এর নিরঙ্কুশ শক্তিকে একত্র করতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।’ সিউল ও ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ২০১৭ সালের পর প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার বলেছেন, উত্তর কোরিয়া পরমাণু পরীক্ষাটি সত্যিই চালালে দেশটি সাইবার আক্রমণের ক্ষমতা রোধ করাসহ আরো শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারে। সিউলের ইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিফ-এরিক ইজলি বলেছেন, কিমের বিজয় দিবসের ভাষণটিকে অস্ত্রবিরতির পর থেকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়ার সাফল্যের প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরীয়দের জাতীয় গর্ব জোরদার করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে। সূত্র : ব্লুমবার্গ।