মেয়েদের পিঠ খোলার পক্ষে সাফাই গাইলেন তসলিমা নাসরিন
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বসন্তোৎসবে তরুণীদের খোলা পিঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান বিকৃত করে লেখা অশ্লীল শব্দের পক্ষে সাফাই গাইলেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন ।
বিষয়টি নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
স্ট্যাটাসটি কিছু অংশ হুবহু তুলে দেয়া হলো-
ইউটিউবে গাঁজা খেয়ে বেসুরো গান গায় গালিবাজ রোদ্দুর রায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারও ভক্ত তৈরি হয়। একটি চাঁদ উঠেছিল গগনের ভিডিওতে তো প্রায় ষাট লাখ লাইক পড়েছে। এর নাম বাস্তবতা। এর নাম আমাদের সময়, যে রকমই এই সময় হোক, এ আমাদের সময়।
এক সময় দেবব্রত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে রবীন্দ্র সঙ্গীত বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছিল, সেই অভিযোগও আর নেই, সেই রক্ষণশীলতাও নেই, দেবব্রত বিশ্বাস বরং তার সব বিকৃতি নিয়েই আগের চেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
আজকাল রোদ্দুর রায় জাতীয় লোকেরা রবীন্দ্র সঙ্গীত বিকৃত করছে। বিকৃত করাটাও কিন্ত এক ধরণের বাক স্বাধীনতা। তার যা খুশি সে তা বলছে, যেভাবে গান গাইতে ইচ্ছে করে, সেভাবে গাইছে। তার কিছু ভক্ত যদি শরীরে তার ফাজলামো ইতরামো এঁকে ঘোরাফেরা করে, তাতে কার কী ক্ষতি?
এইসব বাঁড়া, শালা, বাঞ্চোত শব্দগুলোকে, মূলত মানুষের তৈরি এবং ব্যবহৃত কোনো শব্দকেই রোদ্দুর রায় অশ্লীল বলে মনে করে না। সে মনে করে দারিদ্র্য অশ্লীল, প্রতারণা অশ্লীল, ঘৃণা অশ্লীল,হত্যাকাণ্ড অশ্লীল, যুদ্ধ অশ্লীল।
অশ্লীলতা ব্যাপারটা তো আসলে আপেক্ষিক, একজনের কাছে যা অশ্লীল, আরেকজনের কাছে তা অশ্লীল নয়। যে ভদ্রলোকেরা এই শব্দগুলোকে অশ্লীল বলছে তাদের অনেকে মনে মনে এইসব শব্দ বহুবার উচ্চারণ করে, অথবা এই শব্দগুলো তারা ঘরে বলে, বাইরে বলে না।
বাইরে নকল হলেও ঝলমলে একটা সমাজ তারা দেখতে চায়। ১০০ বছর আগে যেমন ভাবে মানুষ চলতো, যেমন ভাবে বলতো, তেমন ভাবে আজও চলুক বলুক চায়।
কিন্তু সমাজ তো বদলে যাচ্ছে, আগের মতো কেন থাকবে সবকিছু! বদলের চাকা কিন্তু সবসময় ওপরের দিকে ওঠে না, নীচের দিকেও গড়ায়। বদলটা মনের মতো না হলে কান্নাকাটি করার তো দরকার নেই। বুঝতে হবে এই সমাজ এই মানসিকতা হঠাৎ আকাশ থেকে পড়েনি। একেই আমরা সকলে মিলে একটু একটু করে তৈরি করেছি।
কলকাতার শাসকেরা তো বাংলা অন্ত প্রাণ নিরীহ নিরপরাধ তসলিমাকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে, ওই তাড়ানোর চেয়ে কি বাঁড়া শব্দটি বেশি অশ্লীল?