মশার বিরুদ্ধে ঢাবি শিক্ষার্থীর আবিস্কার ‘ফাইটার জেল’
মশাবাহিত রোগের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এমন পরিস্থিতিতে সুখবর দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী এইচ এম রঞ্জু।
তার ভাষ্য, তিনি এমন একটি জেল উদ্ভাবন করেছেন, যেটি মশার কামড় থেকে রক্ষা করবে। এটির নাম রাখা হয়েছে ফাইটার জেল। এরই মধ্যে জেলটির নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এতে সহযোগিতা করেছে সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজের ইকাম বিউটি অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রজেক্টের গবেষকদল।
উদ্ভাবক রঞ্জু ঢাবির ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে অধ্যয়নরত। তার সেশন ২০১৭-১৮। তিনি রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বড় কলকলিয়া গ্রামের কৃষক আকমল হোসাইনের জ্যেষ্ঠ সন্তান। তার ছোট দুই বোন আছে। মা মঞ্জুয়ারা বেগম একজন গৃহিণী। ফাইটার জেলের উদ্ভাবনের আগে রঞ্জু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি প্লান্ট তৈরিতে সফলতা দেখান।
গবেষক রঞ্জু জানান, গত অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় খোঁজা শুরু করেন তিনি। এর মধ্যে করোনা মহামারি শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। তখন তিনি বাড়ি ফেরেন। মে মাসে আরো জোরালোভাবে শুরু করেন গবেষণা। কথা বলেন শিক্ষকদের সঙ্গে। তাঁরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে রঞ্জুকে উৎসাহ দিতে থাকেন। কয়েক মাসের মাথায় সম্প্রতি তিনি জেল উদ্ভাবনে সক্ষম হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রঞ্জু বলছিলেন, তার উদ্ভাবিত ফাইটার জেলটি লেবুর সুগন্ধযুক্ত। এর ব্যবহারে ছয় থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। গত জুলাই ও চলতি আগস্ট মাসে সাধারণ ও অতিমাত্রায় অ্যালার্জি থাকা ১০০ নারী-পুরুষের শরীরে জেলটি ব্যবহার করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এটির ব্যবহারে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
রঞ্জু বলছিলেন, বহুল ব্যবহার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন ল্যাবে ফাইটার জেলের আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলমান। সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে রাসায়নিক বিশেষজ্ঞদের। এই জেল বাজারে এলে কয়েল ও মশা নিরোধক স্প্রের সঙ্গে এটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে তার ধারণা। কারণ কয়েল ও স্প্রের স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে।