ভাসান চর-কে নোয়াখালীতে অন্তর্ভুক্ত করে থানা ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন
সীমানা নির্ধারণ ছাড়া চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার সাবেক ন্যায়ামস্তি ইউনিয়ন (ভাসানচর) কে থানা ঘোষণা করে নোয়াখালী জেলার অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে ও ভাসান চরকে সন্দ্বীপের ভূমি হিসাবে স্বীকৃতির দাবিতে আজ সকাল ১০ টায় সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বক্তারা বলেন, ১৯১৩ সালে করা জরিপ অনুসারে সন্দ্বীপের আয়তন ছিল এক হাজার আট বর্গ মাইল বা ১৬২৮ বর্গ কিলোমিটার। অব্যাহত ভাঙনের কারণে এখন সন্দ্বীপের আয়তন শুধু ২২৫ বর্গ কিলোমিটার।
এককালে সন্দ্বীপের মোট মৌজা ছিল ৬০টি। কিন্তু মেঘনার ভাঙনে এখন ৩৮টি টিকে আছে। সন্দ্বীপের ১৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ন্যায়ামস্তি, ইজ্জতপুর, কাটগড়, বাটাজোড়াসহ ৪টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণ নদী গর্ভে বিলীন হয় কিন্তু সন্দ্বীপের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন মৌজা ন্যায়ামস্তি ১৯৫৩ সাল থেকে ভাঙনের শিকার হতে হতে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে যায়। সাবেক নেয়ামস্তি ইউনিয়নটি বর্তমানে সন্দ্বীপ উপকূলে সাগর বক্ষে জেগে উঠা কথিত ঠেঙ্গারচর যা বর্তমানে ভাসানচর নামে অভিহিত। ২০১৪ সালের ৬ জুন ন্যায়ামস্তি সন্দ্বীপ মৌজায় জেগে ওঠা চর ভূমির সাত হাজার একর জমি বনায়নের জন্য উপকূলীয় বন বিভাগের পক্ষে ৪ ও ৬ ধারার গেজেট প্রকাশ করা হয়।
আরও বলেন এই গণবিরুধী সিদ্ধান্তের প্রতিকার চেয়ে দ্বীপের মানুষ মানববন্ধন, মিছিল মিটিং, স্বারকলিপি প্রদানকরে যখন কোন প্রতিকার পাচ্ছিলো না তখন আদালতের শরণাপন্ন হলে ২/৩/২০১৬ সালে মাননীয় ভূমি মন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রনালয়ের অনুষ্ঠিত সভায় বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী জেলাপ্রশাসকদ্বয় কে নির্দেশ দেন ১৯১৩–১৯১৬ সালের প্রস্তুতকৃত সি.এস ম্যাপের এর উপর ভিত্তি করে দুই মাসের মধ্যে জিপিএস মাননির্ণয় ও কিস্তোয়ার (ডাটা) সংগ্রহ করে জেলার সীমানা নির্ধারণ করতে। কিন্তু ২০১৬ সালের মন্ত্রানালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়াতে গত ২৭শে মে ২০১৮ সালে দিয়ারা জরীপের জন্য সন্দ্বীপ বাসী মহামান্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়, হাইকোর্ট মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্টদের দুই মাসের সময় বেধে দিলেও তারা হাইকোর্ট মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক বেআইনি কাজ করে যাচ্ছে।
সর্বশেষ প্রমান ভাসান চরকে থানা ঘোষণা, আমরা থানা ঘোষণাকে স্বাগত জানাই কিন্তু নোয়াখালী জেলার থানা হিসাবে মেনে নিব না।
এইসময় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সহ সন্দ্বীপের সকল স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন প্লেকার্ড সহ এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে নিরব প্রতিবাদ জানায়।