বাবরি মসজিদে প্রথম আঘাত করা সেই বলবীর সিং, মসজিদ নির্মাণে ব্যস্ত
ভারতের বাবরি মসজিদ ভাঙতে প্রথম যে ব্যক্তিটি আঘাত করেছিলেন তার নাম বলবীর সিং।
কিন্তু সেই বলবীর সিং আজ নও মুসলিম মুহাম্মদ আমের। ভাইরাল হওয়া সেই সিং একদিন মসজিদ ভেঙে দিয়ে আজ পথে পথে ঘুরে আল্লাহর ঘর পুনর্নির্মাণ ও নতুন মসজিদ নির্মাণ করছেন বলে জানা যায়। তিনি এখন আল্লাহর নাম সব সময় জপেন। ভোরে আজান দেন। লম্বা দাড়ি রেখে তিনি এখন পুরো দস্তুর মৌলভি। জানা যায়, প্রায়শ্চিত্ত করতে ভেঙে পড়া শখানেক মসজিদ সংস্কার করতে চান তিনি।
জানা যায়, এক সময় শিবসেনার সক্রিয় কর্মী বলবীর সিং বাবরির মাথায় শাবল চালিয়ে সব খুইয়েছিলেন। বাবা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। স্ত্রীও শোনেননি তার কথা, তার হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেননি। বাবার মৃত্যুর পর বাড়ি ফিরে শুনেছিলেন- বাবা নাকি বলে গিয়েছিলেন তার দ্বিতীয় সন্তানের (বলবীর) মুখ যেন বাড়ির কেউ আর না দেখেন। এমনকী বলবীরকে যেন তার বাবার মুখাগ্নিও করতে না দেয়া হয়।
বলবীরের বন্ধু যোগেন্দ্র পালেরও একই দশা। ২৭ বছর আগে যিনি বলবীরের সঙ্গেই উঠেছিলেন বাবরির মাথায়। শাবলের ঘায়ে ভেঙেছিলেন মসজিদ। বহু দিন আগে তিনিও হয়ে গেছেন পুরোদস্তুর মুসলিম।
বলবীর জানান, তার পরিবার কোনও দিনই উগ্র হিন্দু ছিলেন না। ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান আর ইংরেজি, এই তিনটি বিষয়ে এমএ ডিগ্রি পাওয়া বলবীর তার মা-বাবা, ভাই-বোনদের নিয়ে ছোটবেলায় থাকতেন পানিপথের কাছে খুব ছোট্ট একটা গ্রামে।
বলবীর জানিয়েছেন, বাবরি ভেঙে পানিপথে ফিরে যাওয়ার পর সেখানে তাকে ও যোগেন্দ্রকে তুমুল সংবর্ধনা জানানো হয়। তারা যে দু’টি ইট এনেছিলেন বাবরির মাথায় শাবল চালিয়ে, সেগুলি পানিপথে শিবসেনার স্থানীয় অফিসে সাজিয়ে রাখা হয়।
কিন্তু বাড়িতে ঢুকতেই তেড়ে আসেন বলবীরের বাবা দৌলতরাম। বলবীরের কথায়, বাবা আমাকে বললেন, হয় তুমি এই বাড়িতে থাকবে, না হলে আমি। তো আমিই বেরিয়ে গেলাম বাড়ি থেকে। আমা’র স্ত্রী’ও বেরিয়ে এল না। থেকে গেল বাড়িতেই।