পেঁয়াজ আমদানি সত্ত্বেও মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন
পেঁয়াজ নিয়ে মোনাফালোভীদের চলমান দুর্বৃত্তপনা রোধ ও সংকট মোকাবেলায় প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে আমদানি হাজার হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ। গত সেপ্টেম্বর মাসে আমদানি হয়েছে ৩ হাজার ৫৭৩ দশমিক ১৪১ মেট্রিকটন পেঁয়াজ। আর গত তিনদিনে প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে আমদানি করেছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবসায়ীরা।
স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম দুই দিনে মিয়ানমার থেকে ১ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বন্দরে আরো প্রায় ৮০৩ দশমিক ৭৯৮ মেট্রিকটন পেঁয়াজ বোঝাই ট্রলার নোঙর করা রয়েছে। এছাড়া ১৪টি পেঁয়াজ বোঝাই ট্রলার বন্দরের পথে রওনা দিয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
এদিকে মিয়ানমার থেকে রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি সত্ত্বেও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় বাজারে গত কয়েকদিন আগেও পেঁয়াজের দাম চড়া থাকলেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৫০ টাকা আর ভারতের টা ৭০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয় এবং একই সাথে বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পেঁয়াজের অতিরিক্ত মূল্য আদায়কারী ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় কক্সবাজারের পেঁয়াজের বাজার অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে বলেই জানান সাধারণ ভোক্তারা।
চকরিয়াতেও পেয়াঁজের বাজার সহনীয় রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকালে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান পৌরসভার চিরিংগা সোসাইটি বাজারে অভিযান চালান। বেশি দামে পেয়াজ বিক্রির দায়ে সোসাইটি বাজারের ৪টি মুদির দোকানকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। আমরা কক্সবাজারের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য ৫০ ও ৭০ টাকা নির্ধারণ করেছি। পাশাপাশি বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কোন ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মূল্য আদায় করলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদেরকে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে।
টেকনাফ স্থলবন্দরে পেঁয়াজ আমদানিকারক এমএ হাসেম বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে জানার পরই আমরা দেশে পেঁয়াজের সংকট কাটাতে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিই। দ্রুত সময়ে আমদানিকৃত পেঁয়াজগুলো খালাস করে তা চট্টগ্রামের সরবরাহ করা হচ্ছে। মিয়ানমারের রপ্তানিকারকরা চলতি মাসেও প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ পাঠাবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
টেকনাফ স্থল বন্দরে শুল্ক কর্মকর্তা আফসার উদ্দিন জানান, টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অতীতের যেকোনো রেকর্ড ছাড়িয়েছে। আশা করছি চলতি অক্টোবর মাসে আরো রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হবে। পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদেরকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে, এটি অব্যাহত থাকবে।