ধুলোবালিতে নাজেহাল কক্সবাজারবাসী, হাসপাতালে শিশু ও বয়স্করা
পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার শহর ও উপজেলার একাধিক প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলি গলিতেও উড়ছে ধুলোবালি।
পাশাপাশি যানবাহনের দূষিত কালো ধোঁয়া ও শব্দ মানুষের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। তবে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশু ও বয়স্করা।
বিশেষ করে কক্সবাজার শহরের প্রবেশপথ লিংক রোড থেকে কলাতলি এবং হলিডে মোড় থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়ক ভেঙ্গেচুরে একাকার হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে সড়কের মাঝখানে পাইপলাইনের কাজের কারণে চলছে বিভিন্ন পয়েন্টে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে সময়-অসময়ে বৃষ্টি হলে কাঁদাপানি এবং রোদে ধুলোবালিতে একাকার হয়ে যায় পুরো সড়ক। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা অসহনীয় দুর্ভোগে পড়ছে। প্রতিনিয়ত অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে।
কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট সড়ক এলাকায় রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। ইট, বালু ও খোয়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে সড়ক ও ফুটপাতজুড়ে। প্রায় একমাস ধরে এমন অবস্থা। গতকাল ওই এলাকায় কিছু সময় অবস্থান করে দেখা যায়, অনেকে মাস্ক পরে, আবার কেউ কেউ রুমাল মুখে বেঁধে চলাচল করছেন।
বলতে গেলে বাসটার্মিনাল থেকে ঝাউতলা প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ধুলোবালির জন্য সড়কও দেখা যায় না মাঝেমধ্যে। ধুলোবালির পাশাপাশি যানবাহনের দূষিত কালো ধোঁয়াও মানুষের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরের বদরমোকাম এলাকার আরিফ নামের এক যুবক বলেন, ‘ধুলোবালির জন্য আমরা হাঁটতে পারি না।
টেকনাফ থেকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধ আবু তাহের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘চিকিৎসক বলেছিল ধুলোবালি এড়িয়ে চলতে। টেকনাফ থেকে এখন এখানে এসে নেমেছি। বিকেলে চিকিৎসকের কাছে যাব। পুরো রাস্তায় ধুলো খেতে খেতে কাঁশি শুরু হয়ে গেছে।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: শাহিন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘ধুলোবালিতে অ্যাজমা এবং সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) হতে পারে। অ্যাজমা ও ব্রঙ্কালাইটিসের প্রকোপ বেশি। হাসপাতালে গত কয়েকদিন ধরে হাঁপানি আক্রান্ত শিশু ও বয়স্ক রোগী বেশি আসছে। এমনিতেই শীতের শুরুতেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। ধুলোবালির সঙ্গে দূষিত কালো ধোঁয়াও রোগব্যাধি বাড়াচ্ছে।’ এতে করে শহরের সড়কের ধুলোবালি কমানো ও সচেতনতা বৃদ্ধি করার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। তিনি আরো বলেন, ‘ধুলোবালির কারণে সর্দি, কাশি, অ্যাজমা, অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন রোগে মানুষ আক্রান্ত হবে। ধুলোবালির সঙ্গে গাড়ির কালো ধোঁয়ায় (বিষাক্ত) শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এর মধ্যে অতি কমবয়সী ও বেশি বয়সী লোকজনের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। ধুলোবালি থেকে যতই নিজেকে দূরে রাখা যায় ততই নানা রোগব্যাধি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।’