দেহ দানের বিনিময়ে খাবার পানি পাচ্ছেন কেনিয়ার নারীরা
কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির কোনো কোনো অঞ্চলে চরম পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে সরকারি উদ্যোগে যে খাবার পানি সরবরাহ করা হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যেখানে পানি পাওয়াটা বিরাট চ্যালেঞ্জ, সেখানে পানির জন্য রীতিমত সংগ্রাম করছে নারীরা। অনেক মেয়ে ও নারী তাদের শরীর বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন পানি পাওয়ার জন্য।
এমনই একজন নারী হচ্ছেন মেরি। যিনি প্রতিদিন আট ড্রাম পানি বহন করেন। তিনি বলেন, কিবেরা অঞ্চলের অনেক মানুষ গরীব এবং পানির দাম দিতে তারা হিমশিম খেয়ে থাকেন। এক রাতে পানি আনার সময় একজন বিক্রেতা মেরির ওপর হামলা করেছিল। সেখানে ছিল আরো দুইজন পুরুষ। তারা মেরির পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছিল। তার চিৎকার শুনে অন্য নারীরা এগিয়ে আসার আগেই তিনি ধর্ষিত হয়েছিলেন। তবে লজ্জা ও ভয়ের কারণে সেখানের অনেক নারী পুলিশের কাছে যান না।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্থানীয় পুলিশ বলছে, এই ধরণের মামলায় অভিযোগ গঠন করা খুবই কঠিন। কারণ অধিকাংশ ভুক্তভোগীরা এ ধরণের ঘটনা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন না। সমস্যা হচ্ছে, পুলিশ কখনো ঢালাওভাবে বা সন্দেহের বশে তদন্ত করে না।
কেনিয়ার পুলিশের মুখোপাত্র ব্রুনো শিওসো বলেছেন কেনিয়ার পুলিশের কাছে যেসব ঘটনার রিপোর্ট হয়, সেসব নির্দিষ্ট মামলাগুলো পুলিশ তদন্ত করে। এ ধরনের জানা কোন অভিযোগ এলে, আমরা তদন্তের জন্য তা সাদরে গ্রহণ করি।
কিন্তু পানির এতো বিশাল চাহিদা মেটানোর জন্য সেগুলো যথেষ্ট না। নাইবেরিয়াতে ২০০৫ সাল থেকেই পানির অভাব শুরু হয়েছে। ঘাটতি মেটাতে কিবেরার মত বসতিতে বেসরকারি বিক্রেতারা এগিয়ে এসেছেন। অর্থ দিয়ে পানি নিতে গিয়ে অনেক নারী খুব কঠিন পরীক্ষার মধ্যে পড়েছেন।
মেরি বলেছেন, আমি বাকিতে পানি নিতাম। কিন্তু একটা সময় আসল যখন পানি বিক্রেতা আমাকে প্রশ্ন করল ‘এতো বাকি অর্থ তুমি কীভাবে পরিশোধ করবে?’ আমি তাকে বললাম যে, করোনা মহামারির জন্য আমার কিছুই নেই। তিনি আমাকে বললেন, তাহলে তোমার শরীর দিয়ে আমার দেনা পরিশোধ করে দিও।
সেখানকার স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা ‘পানির জন্য যৌনতার সমাপ্তি’ নামে প্রচারণা দল গঠন করেছেন। তারা আরও নারী কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য ট্যাঙ্ক মালিকদের বোঝাতে শুরু করেছেন। পানি বিক্রেতা নারী হলে নারী ক্রেতারা স্বস্তি বোধ করেন।