fbpx
হোম জাতীয় টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

0

চুয়াডাঙ্গায় ফের টানা তিনদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার (৮ মে) সন্ধ্যার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ জেলায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এছাড়া গত শনিবার ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও রোববার ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জামিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গায় গত তিনদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দিনের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
তিনি জানান, জেলাজুড়ে গত এক সপ্তাহ ধরে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বিরাজ করছিল। তবে এ দুদিন সেটা ৩৯-৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। যেটা গত দুদিন মৃদু তাপপ্রবাহ ছিল। আজ সেটা তীব্র তাপপ্রবাহে রুপ নিয়েছে। সাগরের লঘুচাপের কারণে তাপমাত্রা বেড়েছে।

গত ১৭ এপ্রিল টানা দুই সপ্তাহের চলমান তাপপ্রবাহে পাঁচ দশকের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পাবনার ঈশ্বরদীতে। সেখানে তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। এর দুদিন আগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরআগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। তার আগেও ১৯৯৫ সালে এবং ২০০২ সালে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এরপর একটানা ১৯ দিন প্রচণ্ড তাপে পুড়ে গত মাসের ২৪ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গাবাসী স্বস্তির বৃষ্টির দেখা পায়। এবার কত দিনের অপেক্ষা জানা নেই জেলাবাসীর। তারও আগে গত ১ এপ্রিল বৃষ্টি হয়েছিল এ জেলায়।

এদিকে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর। তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমের সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষ অস্বস্তিতে পড়েছেন। তাপমাত্রাজনিত কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রখর রোদের ঘাম ঝরানো তাপমাত্রার কারণে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম বিপাকে।
একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত, পানি, আইসক্রিম খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। তিন-চার দিন আরো তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা তো রয়েছেই। আর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীব-বৈচিত্র্যের ওপর। এমন প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস চুয়াডাঙ্গাবাসীর।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালক আজগর হোসেন ও রিকশাচালক লিয়াকত আলী জানান, প্রচণ্ড তাপদাহে রোজার মাসে যাত্রী পায়নি। আবার সেই গরম শুরু হয়েছে একেবারে যাত্রী নেই। সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়ার বাসিন্দা কামরুন নাহার বলেন, প্রচণ্ড গরম পড়ছে। তাই বাচ্চা নিয়ে সমস্যায় রয়েছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যায় না। জানি না কবে বৃষ্টির দেখা মিলবে। আবার তিন বছর বয়সী বাচ্চাটাও গরমজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর এলাকার মুদি ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরে যে তাপ উঠছে তাতে দোকানে বসার অবস্থা নেই। পুরো দোকান দিয়ে মনে হচ্ছে আগুন বের হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্র জানায়, গত ২ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ জেলায় রেকর্ড করা হয়। যা কয়েক দশকের মধ্যে একটানা তাপমাত্রা। এবার আবার একটানা তিনদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
এছাড়া গত মাসের ২ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এরপর গত ৩ এপ্রিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৪ ও ৫ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৬ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৭ এপ্রিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৮ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৯ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১০ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১১ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১২ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৩ এপ্রিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৪ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৫ এপ্রিল ৯ বছরের রেকর্ড ভেঙে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

 

 

 

 

 

 

সূত্র  : জাগো নিউজ

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *