জীবনের শেষ আকুতি; যুদ্ধাহতের স্বীকৃতি চান সাহেব আলী
একজন মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলী। ভারতীয় তালিকা নম্বর ৪৩৪৭৯ এবং তার বডি নম্বর ৩২/৩২। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে (৮ আগস্ট) পাকসেনাদের গুলিতে আহত হন সাহেব আলী।
ভারতীয় সেনারা তাকে দ্রুত জলপাইগুড়ির হাসিমারা এয়ারফোর্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাণে বেঁচে যান সাহেব আলী। সুস্থ হলে পুনরায় যুদ্ধে যোগ দেন। তার ভাতিজা আবেদ আলী যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন এমন তথ্যও জানান তিনি।
আজ সকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদনা পরিষদের সম্পাদক সায়েদুল ইসলাম মিঠুর কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলতে গিয়ে জীবনের অনেক দুঃখ আর কষ্টের কথা প্রকাশ করেন তিনি।
তার প্রশ্ন, আজও কেন তাকে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়া হলো না ? বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে এমন তো হওয়ার কথা নয়। প্রমানসহ একাধিকবার বিভিন্ন জনের কাছে গেলেও একজন মুদি দোকানদারের কথা কেউ শুনেনি। স্বীকৃতি না পাওয়ার কথা বলতে বলতে তার চোখের জল গড়িয়ে পরলো মাটিতে।
সন্মুখ একজন যোদ্ধা অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি মেলেনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন হাতীবান্ধার নজরুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব অবঃ)। তিনি “রণাঙ্গনে রাত দিন” নামে একটি বইও লিখেছেন যেখানে সাহেব আলীর আহত হওয়ার ঘটনাটি উল্লেখ করা আছে। প্রথমা প্রকাশন বইটি প্রকাশ করেছে।
সাহেব আলীর মতো গরীব অসহায় বীর সন্তানরা তালিকা বঞ্চিত হবেন। অথচ মুক্তিযোদ্ধা নন, এমন অনেকে পাটগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা সেজে ভাতা তুলছেন এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিশাল অংকের ভাতা পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলী পাঞ্জাবী খুলে দেখালেন তার শরীরের কোথায় কোথায় গুলি লেগেছিল। হাতীবান্ধার গড্ডিমারীতে পুরনো বাড়ি হলেও তিনি এখন লালমনিরহাট পাটগ্রামের সরকারেরহাটে বসবাস করেন। একটা ছোট্ট মুদি দোকানের সামান্য আয়ে সংসার চলে। কতবার যাচাই-বাছাই হলো তবু কেন তিনি বাদ পরলেন তা তিনি জানেন না বলে অবগত করেন।
বলেন, বিজয়ের মাসের শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দেয়া হোক। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদনা পরিষদের সম্পাদক সায়েদুল ইসলাম মিঠুও আশা প্রকাশ করেন সাহেব আলীর প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।