জনগণের জীবন নিয়ে জুয়া খেলবেন না: রিজভী
বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে করোনাভাইরাসের কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, চারদিকে মানুষের কেবলই আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। করোনাভাইরাস ইস্যুতে জনগণের সঙ্গে লুকোচুরি করার মানে হচ্ছে, মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলা। সুতরাং জনগণের জীবন নিয়ে জুয়া খেলবেন না। শনিবার সকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী চিহ্নিত হয়। তারপর সরকার যথেষ্ট সময় পেলেও রাজধানীসহ সারাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউতে ভেন্টিলেটর মেশিন ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের সুবিধাসহ পৃথক হাসপাতাল স্থাপন করতে পারেনি। এখন চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ না করায় বাড়ছে রোগীদের দুর্ভোগ ও মৃত্যুহার।
তিনি আরও বলেন, সরকার ১৬ এপ্রিল সারাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে। সারাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, এটি বুঝতে সরকারের কেন এতো দেরি হলো এটি বোধগম্য নয়। কিন্তু মানুষ বাঁচাতে হলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে জনগণ জানতে পারছে না আসলে হচ্ছেটা কী? অথচ দুনিয়াজুড়ে খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদরা বলছেন-এই সঙ্কটে আলাপ-আলোচনার পথ প্রশস্ত রাখার জন্য। করোনার কারণে যে ভয়ঙ্কর খাদ্য সঙ্কটের প্রকৃত তথ্য জেনে তা প্রতিকারের জন্য মুক্ত আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। অথচ সরকার নিয়ন্ত্রণ আর হুমকির মুখে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে স্বেচ্ছাচারিতা অব্যাহত রেখেছে। সরকারের ভুল বা ব্যর্থতা ধরিয়ে দেয়া চক্রান্তের অংশ নয়, বরং তা গণতন্ত্রের অংশ।
রিজভী বলেন, ত্রাণ নিয়ে এবার আরও ভয়ঙ্কর দলীয়করণ ও লুটপাটের মহামারী শুরু হতে যাচ্ছে। সারাদেশে ত্রাণ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা দিতে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ত্রাণ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ত্রাণের তালিকা করবে। এটি স্থানীয় প্রশাসনকে দেবে। স্থানীয় প্রশাসন তালিকাটি যাচাই-বাছাই করবে। তার মানে এই তালিকায় কেবল আওয়ামী লীগ করা লোকজনের ঠাঁই হবে। ত্রাণ পাবে তারাই। যে সরষের মধ্যে ভূত সেখানে তাদেরকেই যদি দায়িত্ব দেয়া হয়, তাহলে কাদের পক্ষ নিয়েছে তা স্পষ্ট বোঝা যায়।
আমরা এ বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও আশঙ্কা বোধ করছি যে, ত্রাণ কার্যক্রমে এই দলীয় কমিটির কারণে চাল চুরি আরও বৃদ্ধি পাবে। এটা হলে দুর্ভিক্ষ আরও তরান্বিত হবে বলে আমরা মনে করি। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে দিয়ে ত্রাণের তালিকা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।