চোর সন্দেহে হাত-পা বেঁধে ৯ তলার ছাদ থেকে ফেলে রিকশাচালকে হত্যা
রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায় চোর সন্দেহে আটক করা হয় রিকশাচালক শাকিলকে (২৫)। এরপর হাত, পা, চোখ বেঁধে মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবারের (২৫ এপ্রিল) ঘটনা এটি। গুরুতর আহত শাকিল দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান।
পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৫ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত শাকিলকে মারধর করা হয়। রাতে ছাদ থেকে তাকে ফেলে দেওয়া হয়। শাকিলের স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার একটি আড়াই বছরের ছেলে আছে।
জানা যায়, কয়েক দিন আগে নর্দ্দার জাহাঙ্গীর সাহেবের বাড়ি নামে পরিচিত একটি বাড়ি থেকে কিছু বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়। সেগুলোর দাম ছিল প্রায় এক হাজার টাকার মতো। সে সময় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চুরিতে জড়িত একজনকে শনাক্ত করা হয়। তাকে আটক করে মারধর করে চুরির ঘটনায় আর কেউ সম্পৃক্ত কি না এ তথ্য জানতে চান বাসিন্দারা। এ সময় শাকিলের সম্পৃক্ততার কথা জানালে তাকে ডেকে নিয়ে যান। পরে ৯ তলা বাড়ির ছাদে নিয়ে হাত-পা-চোখ বেঁধে তাকে মারধর করা হয়।
শাকিলের এক আত্মীয় কামরুল জানান, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এর কোনো তথ্য-প্রমাণও নেই। সেদিন রিকশা চালিয়ে শাকিল চা দোকানে বসে চা খাচ্ছিল। দুজন ছেলে এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। ৯ তলা বাড়ির ছাদে নিয়ে হাত-পা-চোখ বেঁধে তাকে মারধর করে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাকে মারধর করে চুরি করা তার কোথায় আছে জানতে চাওয়া হয়। সে চুরির বিষয়ে কিছুই জানত না। তাই যতই মারধর করুক এ বিষয়ে সে বলতে পারেনি। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তারা হাত-পা-চোখ বাঁধা অবস্থায় ছাদ থেকে ফেলে দেয়।’
এ ঘটনায় শাকিলের বাবা আলেক মিয়া বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা করেছেন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ভবনের মালিকের ছেলে ইমরান হোসেন শুভকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ শাহানুর রহমান বলেন, চুরির সন্দেহে মারধর করে তাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় তার পরিবার একটি মামলা করেছে। মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে এক দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে তোলা হয়েছে। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাত আরও কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।