চট্টগ্রামে পলি হত্যা মামলা পিবিআইয়ে স্থানান্তরের দাবি
চট্টগ্রামে পলির খুনীর ইন্ধনদাতারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। রোববার চট্টগ্রাম সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে পলি হত্যার বিচারের দাবিতে বিশাল এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তারা বলেন, খুনের মামলা তুলে নিতে ১৪ লাখ টাকায় দফারফার প্রস্তাব কিভাবে দেয় পুলিশ। পলির মা ছখিনা খাতুনকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা যে এই নৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। এমন দফারফা করার প্রস্তাব দেয়ার পর থানা পুলিশের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছে না নিহতের পরিবার। তাই এ মামলার তদন্ত ভার পিবিআইকে দেয়ার জন্য জোর দাবি জানান তারা।
ঘটনার পর থেকে পলির স্কুলের সহপাঠীরা মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নিতে পুলিশের প্রস্তাবকে দুর্ভাগ্যজনক বললেন চট্টগ্রামের মানবাধিকার কর্মীরা।
পলির ভাই রাসেল খান রানা বলেন, ঘটনার পর পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে চায়নি। বিষয়টি সাংবাদিকরা জানার পর থানা পুলিশ মামলা নিয়েছে। মামলায় সন্দেহভাজন আসামি ভবন মালিক একে খানকে (আবুল কাশেম খান) আসামি করতে চেয়েছিলাম। পুলিশ তার নাম এজাহারে দিতে দেয়নি। মামলা নিয়েছে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে। মামলা দায়ের করার পর বন্দর থানার এসআই আবদুল্লাহ আল মামুন সমঝোতার প্রস্তাব নিয়ে যায় আমার মায়ের কাছে। এ সময় মামলা তুলে নিলে ১৪ লাখ টাকা (একে খান থেকে) নিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। আমরা তাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছি আমার বোন হত্যাকারীর সঙ্গে টাকা-পয়সার বিনিময়ে কোনো আপস করব না। হত্যাকারীকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
রাসেল আরও বলেন, থানা পুলিশ এ মামলার বিষয়ে কোন সহযোগিতা করছে না। বরং কিভাবে এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়া যায়, গ্রেফতার আসামি একে খানকে কিভাবে রক্ষা করা যায়, তারা শুরু থেকে সেই চেষ্টাই করছে। টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেয়ার প্রস্তাব এ চেষ্টারই একটি অংশ। তাই আমরা মনে করি, থানা পুলিশ এ মামলা তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বের হবে না। মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করার দাবি জানান নিহতের ভাই।
গত বুধবার রাতে নগরীর বন্দর থানাধীন একে খান টাওয়ারের পাঁচতলা ভবনের নিচতলার ভাড়া বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পলির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পলি হালিশহর আহমদ মিয়া সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। মালয়েশিয়া প্রবাসী ফিরোজ খান ও চট্টগ্রাম ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছখিনা খাতুনের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে পলি ছোট। তাদের গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায়। একে খান টাওয়ারের নিচতলার বাসায় তারা ভাড়া থাকেন।