fbpx
হোম অন্যান্য কুমিরের মতো আকৃতি-স্বভাবের আজব এক মাছ !
কুমিরের মতো আকৃতি-স্বভাবের আজব এক মাছ !

কুমিরের মতো আকৃতি-স্বভাবের আজব এক মাছ !

0

পেছনের অংশ না দেখে যদি শুধু মুখের অংশ দেখেন তাহলে এই মাছকে একবাক্যে সবাই কুমির বলেই মনে করবে। কিন্তু আসলে এটি একটি মাছ। নামও ওদের কুমির মাছ। ইংরেজিতে অ্যালিগেটর গ্যার বলে এই মাছকে। তবে মুখ দেখলে কেও বিশ্বাসই করবে না, ওটা একটা মাছ। মনে হবে আস্ত কুমির। এ মাছের মুখটা কুমিরের মতো। শুধু মুখটাই। শরীরের বাকি অংশ কিন্তু একেবারে মাছের মতো। মুখের ভিতর রয়েছে দুই সারি বড় বড় দাঁত। দুটো সারিই মুখের উপরের অংশে। আর মাছের নামকরণ হয়েছে মুখের এই কুমিরসদৃশতার কারণেই। লেজের দিকে তাকালে বোঝা যায় এটি একটি মাছ। অর্থাৎ মাছের যেমন লেজ থাকে ঠিক তেমনি।

কুমির মাছের গায়ের রঙ বাদামি অথবা জলপাই। কখনও কখনও পেটের দিকে রং খানিকটা হালকা থাকে। এ মাছের আঁশগুলো হীরে আকৃতির। হীরাকৃতির কারণেই আদিম আমেরিকানরা আঁশকে অলংকার হিসেবে ব্যবহার করে। এই কুমির মাছের দেখা মিলবে উত্তর আমেরিকায়। পরিষ্কার পানির মাছ এরা। বিশেষ করে লোয়ার মিসিসিপি নদী এবং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণের উপকূলীয় রাজ্যগুলোতে এই মাছ দেখা যায়। আর পাওয়া যায় মেক্সিকোতে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, ওকলাহোমা, সাউথ ক্যারোলিনা, নর্থ ক্যারোলিনা, ভার্জিনিয়া, লুইজিয়ানা, কেনটাকি, মিসিসিপি, আলাবামা, টেনেসি, আরকানসাস, মিসৌরি, ফ্লোরিডা আর জর্জিয়ায়। এসব মাছের আবাসস্থল সাধারণত বড়সড় নদী, শাখা নদী আর হ্রদে। মোট কথা যেখানে পানি প্রচুর, সেখানেই। এর কারণও আছে। এসব মাছ দানবাকৃতির। একেবারে কুমিরের মতোই আকার। লম্বায় একেকটা হয় ৮ থেকে ১০ ফুটের মতো। আর ওজন হয় একশ কেজির কাছাকাছি।

জানা যায়, এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় কুমির মাছটি ধরা হয়েছিল ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। মিসিসিপি নদীর ভিকসবার্গ থেকে ধরা কুমির মাছটি লম্বায় ছিল আট ফুট পাঁচ ইঞ্চি। আর ওজন ছিল ১৪৮ কেজি। চওড়ায় ছিল চার ফুট। ওই কুমির মাছের বয়স ৫০ থেকে ৭০ বছর বলে ধারণা করেছিলেন প্রাণিবিদরা। কুমির মাছটি যুক্তরাষ্ট্রের জ্যাকসনের মিসিসিপি মিউজিয়াম অব ন্যাশনাল সায়েন্সে সংরক্ষণ করা হয়েছে। কুমির মাছ দেখতে যে কেবল কুমিরের মতো তা কিন্তু নয়। এদের আচার-আচরণও খানিকটা কুমিরের মতো। যেমন- পানি ছাড়া লম্বা সময় বেঁচে থাকতে পারে কুমির মাছ। অন্তত কম করে হলেও দুই ঘণ্টা।

ভাবা হয়েছিল, কুমির মাছ কেবল উত্তর আমেরিকাতেই আছে। কিন্তু ২০০৭ সালে ফেব্রুয়ারিতে একেবারে উল্টো গোলার্ধে খোঁজ মিলল এই কুমির মাছের। তাও আর কোথাও নয়- ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায়। তবে জাকার্তার মাছটি ছিল বেশ ছোট আকারের। লম্বায় পাঁচ ফুটও ছিল না। এরপর ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ৩ কেজি ওজনের আরেকটি কুমির মাছের দেখা মিলল মালয়েশিয়ার পেহাঙের বেরায়। জেলেদের জালে নিজে নিজেই ধরা দেয় মাছটি। এরপর একে একে তুর্কমেনিস্তান, হংকং, সিঙ্গাপুর ও জাপানেও দেখা মিলেছে কুমির মাছের।

কেবল উত্তর আমেরিকার কুমির মাছই দানবাকৃতির। খাবারেও কুমিরের মতো-মাংসাশী। বাকি কুমির মাছ দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বাকিরা প্রত্যেকেই নিরামিষভোজী। উত্তর আমেরিকার কুমির মাছদের খানিকটা বদনামও আছে। কুমিরের মতোই নাকি মানুষকে আক্রমণ করে। যদিও এমন প্রমাণ আজ পর্যন্ত কেও দিতে পারেনি। হয়তো দানবাকৃতির বলেই এমন দুর্নাম দেওয়া হয়েছে এই মাছটির। আকারে দানবাকৃতি হওয়ার কারণে পানিতে এদের চলাচল বেশ ধীর গতিতে। বসন্তে ডিম পাড়ে কুমির মাছ। কুমির মাছের ডিম কিন্তু বেশ বিষাক্ত। ডিম যতই বিষাক্ত হোক, কুমির মাছ কিন্তু বিষাক্ত নয়। কুমির মাছ খাওয়া যায়। দুনিয়ার যেসব দেশে পাওয়া যায়, সেসব দেশের মানুষই খায় কুমির মাছ। খেতেও নাকি বেশ সুস্বাদু।

 

 

তথ্যসূত্র: দৈনিক যুগান্তর অনলাইন

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *