করোনায় শতাধিক স্কুলের শিক্ষকদের মানবেতর জীবন যাপন
করোনায় ঘরবন্দী থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া স্বল্প বেতনে চাকুরী করা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষক অভাব – অনটণে, অনাহারে, অর্ধাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।
শাহজাদপুর পৌর এলাকার মণিরামপুরের ওয়েস্টার্ন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, রূপপুরের আলফা একাডেমি, দ্বারিয়াপুরের ফখরুল মেমোরিয়াল কিন্ডারগার্টেন স্কুল এবং বাড়াবিল উত্তরপাড়ার আলহাজ্ব আবু তালেব ডিজিটাল বিদ্যানিকেতন এর কয়েকজন শিক্ষক এবং কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তাদের দুর্দশা এবং অসহায়ত্বের বিষয়টি জানা যায়।
আলফা একাডেমী’র অধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম এবং ওয়েস্টার্ন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল এবং শাহজাদপুর কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের শিক্ষা ও পরীক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হায়দার আলী জানান, আমরা তো শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর নির্ভরশীল। করোনার প্রভাবে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এখন পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন আদায় করা সম্ভব হয়নি। ফলে শিক্ষকদের বেতন দেওয়াও সম্ভব হয়নি। আলহাজ্ব আবু তালেব ডিজিটাল বিদ্যানিকেতন এর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, “আমরা স্বল্প বেতনে চাকুরী করি। এই সামান্য অর্থ দিয়েই আমাদের ছেলে মেয়ে নিয়ে কোন রকমভাবে সংসার চালাতে হয়। বাড়তি কিছু আয়ের জন্য টিউশনি করি, করোনার প্রভাবে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে। গত মাসের (মার্চ) বেতনও পাইনি। স্কুল কবে খুলবে তারও নিশ্চয়তা নেই।
শাহজাদপুর কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি ও ফখরুল মেমোরিয়াল কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ জাকারিয়া ইসলাম ঠান্ডুও অনুরূপ মন্তব্য করেন। তিনি আরো জানান, কর্মসংস্থানের অভাবে শিক্ষিত (ক্ষেত্র বিশেষে দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী) বেকার কিছু মানুষ কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোতে চাকুরী করছেন। এই দুর্দিনে আমরা চক্ষু লজ্জায় না পারছি কারো কাছে হাত পাততে আবার না পারছি সংসার চালাতে। ফলে অনেক শিক্ষকই অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে করোনা ভাইরাসের আক্রমণের এই মহা দুর্যোগে শাহজাদপুরের কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের প্রতি সুনজর দেয়ার দাবী জানান। এই দুঃসময়ে শিশুদের শিক্ষার মজবুত ভীত তৈরির কারিগর কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষিত সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষকদের পাশে দাড়ানো সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অবশ্য কর্তব্য বলে সচেতন মহল মনে করছেন।