fbpx
হোম গণমাধ্যম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে লিজার মহানুভবতার গল্প
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে লিজার মহানুভবতার গল্প

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে লিজার মহানুভবতার গল্প

0

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার লালমাটিয়া এলাকার বাসিন্দা আসমা আক্তার লিজার (৩৬) মহানুভবতার গল্প আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হলেও নিজ দেশে অনেকেই জানেন না তার মানবিকতার কথা।

প্রথম রোজা থেকেই তিনি প্রতিদিন নিয়ম করে দুই হাজার রোজাদার ব্যক্তিকে নিজ খরচে ইফতার করাচ্ছেন। এ জন্য তিনি কারও কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা নেন না। তবে বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী আছেন তার সঙ্গে এ কাজে সহায়তার জন্য। প্রতিদিন তার কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

লিজা তার এই বিনামূল্যের ইফতার সরবরাহ করার কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘মেহমানখানা’। তার এ মেহমানখানার মেহমানরা হচ্ছেন— এতিম, অসহায়, গরিব, রিকশাওয়ালা, দিনমজুর, হকার ও লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্নআয়ের লোকজন।

ইফতারির ঠিক আগে লিজার বাড়ির সামনে মেহমানদের লাইন লেগে যায়। বাসার গেটে প্রতিদিন এক হাজার ৬০০ মানুষের ইফতারের আয়োজন থাকে। আর ৪০০ জনকে তাদের বাসায় ইফতার পৌঁছে দিয়ে আসা হয়। কারণ তারা চক্ষু লজ্জায় এখানে আসতে পারে না। লকডাউনে চাকরি হারিয়ে যারা নিদারুন অর্থকষ্টে আছেন, এমন পরিবারে পৌঁছে দেওয়া হয় খাবার। আর এ মহতি কাজে লিজাকে সহায়তা করেন তার মতোই পরোপকারী ও উদার মনের ১৬ স্বেচ্ছাসেবী।

গত বছর লকডাউনের সময়ও তিনি অসহায়দের এভাবে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করেছেন। ইফতারের ম্যানুতে থাকছে— শরবত, জিলাপি, খেজুর, পেঁয়াজু, শসা ও মুড়ি। তবে প্রতি শুক্রবার ম্যানুতে থাকছে গরুর মাংস, সাদা ভাত ও সবজি। লিজাকে তার কয়েকজন বিত্তবান স্বজন ও বন্ধুবান্ধব— এমনকি কয়েকজন ব্যবসায়ীও এ কাজে আর্থিক সহায়তা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে তিনি বিনয়ের সঙ্গে অসম্মতি জানান। কারণ তিনি এ মানবিক কাজে কোনো করপোরেট ট্যাগ লাগাতে চান না।

লিজা বহু বছর ধরে সুবিধাবঞ্চিত ও এতিম শিশুদের নিয়ে কাজ করেছেন। লালমাটিয়ায় ২৫-৩০টি পথশিশুকে বিনামূল্যে খাওয়ানের মধ্য দিয়ে তার এ মানবিক কর্মসূচি শুরু হয়। এতে তিনি মানসিক প্রশান্তি পান।

লিজার পর পর তিনটি নবজাতক মারা যাওয়ার পর তিনি এতিম ও পথশিশুদের সেবা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এদের মধ্যে আমি আমার হারানো শিশুদের মুখের ছবি দেখতে পাই। লিজাকে তার এ মানবিক কাজে সহায়তা করছেন ৫ নারী ও ১১ পুরুষ স্বেচ্ছাসেবী। তারা প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে কাজে লেগে যান।

এদের মধ্যে একজন হলেন, আয়েশা ফেরদৌসি (৩৯)। পেশায় তিনি একজন স্কুলশিক্ষিকা। ফেসবুকে এ মানবিক কাজের কথা শুনে তিনি ১৭০ দূরের জেলা কুষ্টিয়া থেকে এসে এখানে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন। স্কুল বন্ধ থাকায় পুরো সময়টাই তিনি লিজার সঙ্গে এ মানবসেবায় ব্যয় করছেন।

আয়েশা ফেরদৌসি জানান, কুষ্টিয়া গিয়ে তিনিও এভাবে অসহায়দের পাশে দাঁড়াবেন।লিজার সঙ্গে কাজ করে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে, তা তিনি কাজে লাগাতে চান।আরেক স্বেচ্ছাসেবী হলেন, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাঈদ সাবেদ বনানি (১৯)। তিনি এসেছেন ২৪৫ কিলোমিটার দূরের শহর চট্টগ্রাম থেকে।

সাঈদ সাবেদ জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাসায় বসে থাকা ছাড়া কোনো কাজ নেই, তাই জনহিতকর এ কাজে যোগ দিয়েছি। লিজার মেহমানখানায় আসা মো. আটর আলী (৫৯) নামে এক রিকশাচালক বলেন, আল্লাহ তার মঙ্গল করুন। এ দুর্দিনে আমার ইফতারের ৫০ টাকা বেঁচে যাচ্ছে।এ টাকা জমিয়ে আমি গ্রামে আমার দরিদ্র পরিবারের কাছে পাঠাই।

সূত্র: আরব নিউজ

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *