‘আওয়ামী লীগের আমলে ৩ হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে’
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত এক দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ৩ হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দলের পক্ষ থেকে ওই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা আমাদের জাতিকে ব্যথিত করেছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই সরকারের অধীনে এ দেশে প্রায় তিন হাজার মানুষ পুলিশ, র্যাব, ডিবির হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত ১৩৪ জন মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। এর অধিকাংশই বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী। এদের মধ্যে হয়তো আপনাদের কারো ভাই, বন্ধু, স্বজন প্রতিবেশী আছে। উক্ত ১০ বছর সময়ের মধ্যে এ দেশে জেল কাস্টডিতে মারা গেছেন ৭৯৫ জন মানুষ। গুম হয়েছেন ৬০১ জন মানুষ। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭৮০৬ জন নারী। ১৯৩৪ জন শিশু নির্যাতিত হয়েছে, ১৮ জন শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ১ লাখের বেশি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। এই চিত্র বলে দেয় লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে, লাখো মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতার স্বদেশ প্রিয় জন্মভূমি আজ মৃত্যু উপত্যকা, জল্লাদের রঙ্গমঞ্চ।’
ফখরুল বলেন, ‘বিনাবিচারে মানুষ খুন-গুম কখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে যায় না। আমাদের সংবিধান এটাকে সমর্থন করে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য, ভিন্নমতকে দমন করার জন্য এ ধরনের খুন-গুম-অত্যাচার- নিপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবেও গণ্য হতে পারে। তাই আমরা বারবার বলতে চেয়েছি, আজকের আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ওয়াজেদের আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, গণতন্ত্রের বিপক্ষে গিয়ে স্বৈরাচারী পথে হেঁটে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। তাই, দেশ আজ ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এই অবস্থার অবসান চাই, বিনাবিচারে হত্যাকাণ্ড বন্ধ চাই, সাংবিধানিক শাসন চাই, খুন-গুমের রাজনীতি বন্ধ চাই, সকল বিনাবিচারে হত্যা-গুম-খুনের বিচার চাই।’