fbpx
হোম আন্তর্জাতিক অ্যামাজনকে বাঁচাতে বিমান থেকে পানি ঢালবে বলিভিয়া 
অ্যামাজনকে বাঁচাতে বিমান থেকে পানি ঢালবে বলিভিয়া 

অ্যামাজনকে বাঁচাতে বিমান থেকে পানি ঢালবে বলিভিয়া 

0

ব্রাজিলের অ্যামাজন জঙ্গলকে বাঁচাতে বিমান থেকে পানি ঢালার উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া। 

গত তিন সপ্তাহ ধরে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ খ্যাত জঙ্গলটিতে জ্বলতে থাকা আগুনে এরই মধ্যেই পুড়ে গেছে ৭ হাজার ৭৭০ বর্গকিলোমিটার এলাকা। সারা বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে আলোচনা হলেও, আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করা যায়নি কোনও ভাবেই। এই কাজে প্রথম এগিয়ে এল বলিভিয়া।

বলিভিয়ার রাষ্ট্রপতি ইভো মোরালেস আগেই সাহায্যের কথা বলেছিলেন ব্রাজিলকে। কিন্তু তখনও সে ভাবে টনক নড়েনি ব্রাজিল সরকারের। তবে, এবার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। দাবানলের ছড়িয়ে পড়া রুখতে সুপার ট্যাঙ্কার বোয়িং বিমান ৭৪৭-৪০০ ভাড়া করার কথা ঘোষণা দিয়েছেন ইভো। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে আগুন আয়ত্বে আনতে আকাশ পথে ওই ট্যাঙ্কার নিয়ে অভিযানও শুরু হয়েছে।

বলিভিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট আলভারো গার্সিয়া জানিয়েছেন, দেড় লাখ লিটার পানি বা অগ্নি নির্বাপক নিয়ে উড্ডয়নে সক্ষম এই সুপারট্যাংকার বোয়িং বিমান। এই বিমান থেকে পুড়তে থাকা অ্যামাজনে পানি ঢালা হবে। তার আগে বিমানবাহিনীর বিমান গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে আসবে। এরপরই পানি নিয়ে উড়াল দেবে সুপার ট্যাংকার বোয়িং বিমান।

সুপার ট্যাংকারটির সঙ্গে রয়েছে তিনটি অতিরিক্ত হেলিকপ্টার। রয়েছেন ৫০০ অগ্নিনির্বাপন কর্মী। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে অ্যামাজন জঙ্গলে নেমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করবেন তারা।

প্রতিবেশী প্যারাগুয়ে ও ব্রাজিলের প্রতিও সীমান্তে আগুন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বলিভিয়া।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা অক্সিজেনের ২০ শতাংশেরই উৎপত্তি অ্যামাজনে। গবেষকদের মতে এই বন প্রতিবছর ২০০ কোটি মেট্রিক টন কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। সে কারণে একে ডাকা হয়ে থাকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামে। 

সারা পৃথিবীকে অক্সিজেনের জোগান দেওয়া ছাড়াও গ্রিনহাউস গ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখে এই অরণ্য। এখন এই দাবানলের ফলে সেখান থেকেই বিপুল পরিমাণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হচ্ছে। বিষিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ। ভেঙে পড়ছে অরণ্যের বাস্তুতন্ত্রও। 

পৃথিবীর সবচেয়ে জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর এই অরণ্যে ২৫ লক্ষের বেশি পতঙ্গের প্রজাতি, ৪০ হাজারের বেশি গাছের প্রজাতি, দু’হাজার পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রজাতি এবং ২ হাজার ২০০ প্রজাতির মাছের বাস। আগুনে পুড়ে যাচ্ছে তারাও।

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হারকে ধীর করতে অ্যামাজনের ভূমিকাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। বিশ্বের দীর্ঘতম এ জঙ্গলটির আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের আয়তনের প্রায় অর্ধেক।

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স ২০১৩ সাল থেকে অ্যামাজন জঙ্গলে আগুন লাগা নিয়ে গবেষণা করছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে রেকর্ড হারে পুড়ছে অ্যামাজন জঙ্গল। এরইমধ্যে ব্রাজিলের রোন্ডানিয়া, অ্যামাজোনাস, পারা, মাতো গ্রোসো অঞ্চলের কিছু অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। 

অ্যামাজনে আগুন লাগা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়, কিন্তু এবারের মতো ভয়াবহরূপে আগে কখনও আগুন ছড়ায়নি জঙ্গলে।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, অ্যামাজনকে বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত করার সরকারি নীতির কারণেই আগুন লাগানোর মহোৎসব শুরু হয়েছে। 

অঞ্চলটিকে ঘিরে করা কয়েকটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কথিত উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির জন্য কৃষির বিস্তৃতি, বৈধ ও অবৈধ খনি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের জন্য ঘটছে অরণ্য বিনাশ। গত কয়েক দিনের আগুন কথিত উন্নয়নের জন্য অরণ্য বিনাশের গতিকেই জোরদার করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র: গ্লোবাল রিসার্চ, স্পুটনিক

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *