fbpx
হোম অনুসন্ধান অপরাধবার্তা অবশেষে কারাগারে সোনালী লাইফের বরখাস্ত সিইও রাশেদ
অবশেষে কারাগারে সোনালী লাইফের বরখাস্ত সিইও রাশেদ

অবশেষে কারাগারে সোনালী লাইফের বরখাস্ত সিইও রাশেদ

0

অর্থ আত্মসাতের মামলায় দেশের পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটডের বরখাস্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর রাশেদ বিন আমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
কোম্পানির পক্ষ থেকে দায়ের করা অর্থ আত্মসাতের এই মামলায় জামিনে ছিলেন রাশেদ বিন আমান। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার (৫ মার্চ) তিনি আদালতে উপস্থিত হয়ে পুনরায় জামিন আবেদন করেন। তবে আদালত সে আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
রাশেদের দুর্নীতির ফিরিস্তি দেখে হতবাক তদন্ত কমিটি
কোম্পানির তহবিল থেকে অর্থ লোপাটসহ বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
অর্থ আত্মসাৎ ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগে কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর রাশেদ বিন আমানকে বরখাস্ত করেছে সোনালী লাইফের পরিচালনা পর্ষদ।
অর্থ লোপাটের অভিযোগে মীর রাশেদ বিন আমানকে প্রধান আসামি করে কোম্পানির পক্ষ থেকে করা হয়েছে মামলা। রামপুরা থানায় দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মাধ্যমে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি কেনারও অভিযোগ উঠেছে। দেশেও কিনেছেন বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট। কোম্পানির কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে, কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে (আইডিআরএ) অভিযোগ করেছেন বরখাস্ত সিইও রাশেদ।
অন্যদিকে, রাশেদের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কোম্পানির বোর্ড সভায় আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কৃর্তপক্ষ। তদন্তে নেমে মীর রাশেদে বিন আমানের দুর্নীতির খতিয়ান দেখে রীতিমত আঁৎকে উঠেছে তিন সদস্যের কমিটি। বেনামী শেয়ার কিনে বোর্ডে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা, আত্মীয় স্বজনদের নামে শেয়ার কেনা, মিথ্যা পলিসি করা, কোম্পানির টাকা থেকে নগদ উত্তোলন করে তাদের প্রিমিয়াম জমা দেওয়া, গ্রুপ পলিসির টাকা আত্মসাৎ, টার্ম লোন ক্লোজড ও এসওডি ক্লোজড এর নামে টাকা আত্মসাৎ, বেতনের অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন, কোম্পানির টাকায় নিজের নামে একাধিক দামি বাড়ি ও গাড়ি কেনা, কোম্পানির টাকায় দ্বিতীয় স্ত্রীর স্বজনদের নিয়ে দেশে বিদেশে ভ্রমণ, কোম্পানির টাকায় নিজের নামে জমি কেনা, ব্যক্তিগত লোন পরিশোধ, কোম্পানির একাধিক নারীর সঙ্গে রাশেদের অবৈধ সম্পর্ক, চাপ প্রয়োগ করে কোম্পানির অধঃনস্ত কর্মীদের অন্যায় কাজে সহযোগিতা করতে বাধ্য করা, অবৈধভাবে কমিশন গ্রহণ, নিজের অপরাধ ঢাকতে টাকার বিনিময়ে নিজের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ, নিজের অপরাধ ঢাকতে কোম্পানির চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের নামে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে মিথ্যা অভিযোগ, দখলবাজীসহ নানা তথ্য উঠে এসেছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৭ জুন মীর রাশেদ বিন আমান কোম্পানি থেকে অবৈধভাবে এক কোটি টাকা ও ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিজ অ্যাক্যাউন্টে জমা ও আত্মসাত করেন।
তদন্ত কমিটি আরও বলছে, মীর রাশেদ বিন আমান কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বেতনের বাইরে কোম্পানি থেকে নিজের বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ২০২০ সালে ৩ কোটি ৯৯ লাখ, ২০২১ সালে ৬ কোটি ৯৫ হাজার, ২০২২ সালে ১ কোটি ২১ লাখ ‍এবং ২০২৩ সালে ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা সরিয়েছেন। এছাড়াও সিইও হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর বিভিন্নভাবে কোম্পানির কোটি কোটি টাকা নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়েছেন মীর রাশেদ বিন আমান।এসবের বাইরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে মীর রাশেদ বিন আমানের বিরুদ্ধে ৭০টিরও বেশি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন তদন্ত চলাকালে কমিটিকে তথ্য দিয়ে কোনো প্রকার সহযোগিতা করেননি মীর রাশেদ বিন আমান।
এদিকে, রাশেদ বিন আমানের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কর্মকর্তারা জানান, তদন্ত চলমান কোনো বিষয় নিয়ে তাদের মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে নিবন্ধন পাওয়া নতুন প্রজন্মের জীবন বিমা কোম্পানি সোনালী লাইাফের সারাদেশে তাদের ২০৫টি শাখা। কোম্পানিটির বীমা গ্রাহক সাত লাখের বেশি। এজেন্ট রয়েছে ৩০ হাজারের মতো, এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ৮০০ জন।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *