৫ বছর বেতন বাকি, অভাবে আত্মহত্যা করলেন সাংবাদিক
৫ বছর বেতন না পেয়ে হতাশায় আত্মহত্যা করেছেন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর এক সাংবাদিক। গত রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) অফিসের নিউজরুমেই আত্মহত্যা করেন তিনি।
খবর দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৬ বছর বয়সী ওই সাংবাদিকের নাম টি কুমার। বেতনের অভাবে আত্মহত্যা করা এই সাংবাদিক ভারতীয় বার্তাসংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়ায় (ইউএনআই) ফটো জার্নালিস্ট এবং ইউএনআই’র তামিলনাড়ু ব্যুরো প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গত রোববার সন্ধ্যায় অফিসের নিউজরুমে আত্মহত্যা করেন টি কুমার এবং পরদিন তার মরদেহ উদ্ধার করেন সহকর্মীরা।
এদিকে টি কুমারের এই মৃত্যুতে ভারতের সাংবাদিকতা ও সার্বিক ব্যবস্থপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বার্তাসংস্থা ইউএনআই’র কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, নিয়মিত বেতন না পাওয়ার কারণে তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে ছিলেন টি কুমার। তারা বলেন, গত ৬০ মাস ধরে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বেতন পাচ্ছেন না।
ইউএনআই’র এডিটর-ইন-চিফ অজয় কুমার কাউল সাংবাদিকের আত্মহত্যার এ ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক’ উল্লেখ করে বলেন, ‘পুলিশের উচিত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা’।
দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যার আগে টি কুমার কোনো সুইসাইড নোট রেখে যাননি। (কোনো সমস্যা থাকলে) আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কারণ হিসেবে সেখানে তিনি আর্থিক চাপ বা বেতন বকেয়ার মতো কিছু উল্লেখ করে যেতেন।’
তার দাবি, সাংবাদিকের আত্মহত্যার ঘটনার পেছনে কারণ হিসেবে বেতন বাকি থাকার কথা বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছ। কিছু মানুষ ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, এটি কি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু? আমরা চাই পুলিশ এটি ভালোভাবে তদন্ত করে খুঁজে বের করুক।’ ঘটনার প্রকৃত কারণ আমরাও জানতে চাই।
সোমবার সকালে টি কুমারের মৃত্যুর বিষয়টি টুইটারে প্রথম প্রকাশ করেছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক বিশ্ব বিশ্বনাথ। সেখানে তিনি লিখেন, ‘ভারতের অন্যতম শীর্ষ ও অগ্রগামী বার্তাসংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়ায় একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে খুব অল্প বয়সে যোগ দিয়েছিলেন টি কুমার। কিন্তু নিজের জ্ঞান ও কর্ম দক্ষতার কল্যাণে তিনি ইউএনআইয়ের তামিলনাড়ু ডিভিশনের ব্যুরো প্রধান হয়ে যান।’
ইউএনআই গত ৬০ মাস ধরে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে না। ইউএনআইয়ের সকল কর্মীরা কিস্তির মাধ্যমে তাদের মাসিক বেতন পাচ্ছেন। কিন্তু সেই কিস্তিও নিয়মিত পরিশোধ করা হয় না।’
বিশ্বনাথ আরও বলেন, ‘টি কুমার অন্য কোথাও না, চেন্নাইতে অবস্থিত ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়ার তামিলনাড়ু অফিসের সেন্ট্রাল হলে আত্মহত্যা করেছেন। তার পুরো জীবনটা যে ইউএনআই ধ্বংস করেছে এটি তিনি অনুভব করেছিলেন এবং এখানে আত্মহত্যা করা সেটিরই ইঙ্গিত।’