পাঁচ কোটি বছর আগের ঘোড়ার অবয়ব
কেমন ছিল আজ থেকে প্রায় পাঁচ কোটি বছর আগের ঘোড়া ? এমন প্রশ্নের উত্তর বের করেছেন বিজ্ঞানীরা। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের জীবাশ্বসমৃদ্ধ এলাকা মিসেলে ২০১৫ সালে মিলেছিল ঘোড়ার পূর্বপুরুষ ইকুয়িডের একটি কঙ্কাল।
অন্তত চার কোটি ৮০ লাখ বছর (৪৮ মিলিয়ন) আগের ইকুয়িড শাবকের সেই কঙ্কালটির নতুন নাম দেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় অক্ষত জীবাশ্মটির নাম দেয়া হয় ‘প্রোপালেওথেরিয়াম ভইগতি’।
প্রোপালেওথেরিয়াম ভইগতির ঘাড় ছিল খাট। পিঠ ছিল ধনুকের মতো ঊর্ধ্বদিকে বাঁকানো। এদের পায়ে ছিল ছোট ছোট খুর, যার সাথে বর্তমান কালের ঘোড়ার খুরের কোনোই মিল নেই।
অরণ্যচারী এই প্রাণীর প্রধান খাদ্য ছিল মাটিতে ঝরে পড়া জাম জাতীয় রসালো ফল ও এর পাতা। ইয়োসিন যুগের শেষ দিকে প্রোপালেওথেরিয়াম ভইগতির উত্তরপুরুষদের পা ক্রমশ লম্বা হতে থাকে। ধীরে ধীরে আধুনিককালের ঘোড়ার পায়ে রূপ নেয় এই প্রাণীটির পা।
সহকর্মীদের নিয়ে কম্পিউটার টমোগ্রাফির মাধ্যমে কঙ্কালটি স্ক্যান করেন জার্মানির ফ্রিডরিখ শিলার বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্ম বিশেষজ্ঞ মার্টিন ফিশার। পরবর্তীতে থ্রিডি পদ্ধতিতে প্রাণীটির অবয়ব গড়ে তোলা হয় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
তবে থ্রিডি অবয়বের সঙ্গে আমাদের চিরচেনা ঘোড়ার মিল দেখা যায় সামান্যই। বরং আধুনিককালে দেখতে পাওয়া ‘বেজার’ নামের প্রাণীর সঙ্গেই নতুন অবয়বটির মিল দেখা যায়।
বিজ্ঞানীরা জানান, ইয়োসিন যুগে ইউরোপ ও এশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছিল প্রোপালেওথেরিয়াম ভইগতির উত্তরসূরিদের বিচরণ। বর্তমান সময়ে দক্ষিণ আমেরিকা ও এশিয়ায় বিচরণ করা টাপিরের সঙ্গে এদের চেহারার সাদৃশ্য ছিল। আজকের দিনের চিত্রা হরিণের মতো রোমশ চামড়ায় ঢাকা ছিল এদের গা। দলবেঁধেই বিচরণ করত এই প্রাণীটি।