বাদ পড়া পরিবারকে অন্তর্ভূক্তকরণের দাবী মাতারবাড়ির ক্ষতিগ্রস্তদের
মহেশখালীর মাতারবাড়িতে নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নে বাদ পড়া ৭টি পরিবারকে অন্তর্ভূক্ত করে নতুন তালিকাসহ ৭ দফা দাবী দিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা। সেই সাথে জাইকার মতো একটি প্রতিষ্ঠান তাদের এলাকায় অন্তত কিছু হলেও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার শহরের একটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ দাবীর কথা পেশ করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
দাবীসমূহ :
মাতারবাড়ীর পশ্চিমে বেড়িবাধেঁর নিকটতম এলাকা থেকে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের কারণে বেড়িবাধঁটি অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছর দ্রুত ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বেশ ক’টি বাড়ী তলিয়ে গেছে। এছাড়াও লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়ী প্লাবিত হচ্ছে। এ জন্য জরুরী ভিত্তিতে সরকার বা প্রকল্প কতৃপক্ষ দ্রুত বেড়িবাধঁটি নির্মাণ করে মাতারবাড়ীর দ্বীপবাসীকে রক্ষা করতে হবে। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের ফলে বর্জ্য পলিমাটি নির্গত হয়ে কোহেলীয়া নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। মাতারবাড়ি ও ধলঘাটের মানুষের কাছে এই নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। এই নদীটি মরে গেলে এই এলাকার মানুষের জীবনজীবিকা ও পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় ট্রলার চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে স্থানীয় শতাধিক ফিসিং ও কার্গো ট্রলার মালিকরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। এছাড়া নদী মাছশুণ্য হয়ে গেছে। নদীটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য অনতিবিলম্বে ড্রেজিং করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কয়লাবিদ্যূৎ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কারণে ৬টি স্লুইচগেট ও ৬টি কালভার্টসহ পানি নিষ্কাষণের সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরীভিত্তিতে পানি নিঃস্কাশনের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। জলাবদ্ধতার কারণে যারা পানিতে ডুবে মারা গেছে তাদের ক্ষতিপূরণসহ প্রকল্পের বাইরে চিংড়ী, ধান ও লবন চাষ করতে না পারার কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ও হচ্ছেন, তাদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তারা আরো বলেন, গত ৬ মাস আগে প্রকল্পে প্রায় ১২০০ মত শ্রমিক কাজ করলেও বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় আনুমানিক ৭০০ এর মত শ্রমিক কাজ করছে। এর মধ্যে মাসিক ভিত্তিতে ৩০০ জনের মত ও দৈনিকভিত্তিতে ৪০০ জনের মত। এর বাইরে বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়াও কর্মরত শ্রমিকরা শ্রমের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। দালালরা বেশিরভাগ টাকা কেটে রাখছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চাকুরী দেওয়ার কথা ছিল। তালিকাভুক্ত ও উচ্ছেৎকৃত পরিবারের তালিকা থেকে আবদু জাব্বার, বদর উদ্দীন, মোহাম্মদ ইউনুচ, মোহাম্মদ কাইছার, কামাল হোসাইন, মো: নাছির উদ্দীন ও মফিজুর রহমান নামে ৭ জনের নাম বাদ পড়েছে। পুনরায় তালিকাভুক্ত করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। উক্ত তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে। এছাড়াও পেছনে কারা জড়িত তাদের খুজেঁ বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রাণ প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চের সদস্য সাহাব উদ্দিন, জনসুরক্ষা মঞ্চ কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক ইমাম খাইর, জনসুরক্ষা মঞ্চ মহেশখালীর সভাপতি নুর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মহসিন, হামেদ হোসাইন মেম্বার, শকুনতাজ মেম্বার, শাহাদত হোসাইন নাসির, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য আবদুল জব্বারসহ অনেকে।