হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু নিয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির প্রতিবেদন অস্পষ্ট, সন্তোষজনক নয়: হাইকোর্ট
র্যাব হেফাজতে নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের (৪০) মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গঠিত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদন সন্তোষজনক নয় বলে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ অভিমতসহ আদেশ দিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ছয়টি দিক তুলে ধরে আদালত বলেছেন, প্রতিবেদনটি অস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট ফাইন্ডিংস উল্লেখ করা হয়নি। ভুক্তভোগীকে গ্রেপ্তার করার সময় নিয়েও তথ্যগত ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। রুল শুনানির জন্য প্রস্তুত, তাই ২৯ নভেম্বর বেলা দুইটায় রুল শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করা হলো।
হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু: র্যাবের ১১ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ
জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন গত ২০ আগস্ট আদালতে দাখিল করা হয়। সেদিন আদালত আদেশের জন্য ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে।
আদালতে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান ও তৌফিক সাজাওয়ার। সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। গত ২২ মার্চ নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে তাঁকে আটক করে র্যাব। ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। র্যাবের ভাষ্য, প্রতারণার অভিযোগে সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়েছিল। আটকের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
র্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু নিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে
এ ঘটনায় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিচারিক তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক গত ২৮ মার্চ রিটটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ এপ্রিল হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।
আদেশে জেসমিনের মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কমিটিতে নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অন্তর্ভুক্ত করে ওই কমিটি গঠন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।