ট্রফিটা লিওনেল মেসির
দেশের জন্য একটা ট্রফি! শুধুই একটা ট্রফি। অসংখ্য অর্জনের ভীড়ে এই একটা ট্রফির প্রশ্নে লিওনেল মেসির মুখ মলিন হয়ে ওঠে। নির্ঘুম কত সহস্র রজনী কাটিয়েছেন কে জানে! ৫ বার ট্রফির কাছে গিয়ে খালি হাতে ফিরেছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলারের তকমাটা মুহুর্তের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। লিওনেল মেসির জন্য একটা ট্রফি কতোটা অধরা ছিল এতকাল!
অবশেষে অনন্ত অপেক্ষা ফুরোলো। পুড়ে পুড়ে আর্জেন্টাইনদের স্বপ্ন পূর্ণ হলো। লিওনেল মেসির হাত ধরে পড়ন্ত বেলায় এলো বহুল কাঙ্খিত সেই ট্রফি।
ম্যাচের শেষ বাঁশিটা বাজতে না বাজতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মেসি। চোখে জল সতীর্থদের, এমনকি কোচেরও।
এবারের কোপা আমেরিকা জেতার জন্য কম করেন নি মেসি। এবার নয়তো কখনোই নয়, এমন একটা সমীকরণ ছিল তার সামনে। ৩৪-এ পা দিয়েছেন কিছুদিন আগে। আরেকটা মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে তার পা পড়বে কিনা বলা মুশকিল। লিওনেল মেসি তাই প্রাণপনে লড়েছেন। শুরু থেকে শেষ, লড়ে গেছেন। কখনো রক্তাক্ত পায়ে, কখনো খুঁড়িয়ে-ইনজুরি নিয়ে, হাল ছাড়েন নি কেবল। গোল করেছেন, গোল করিয়েছেন। আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা, সর্বোচ্চ গোলের যোগানদাতা, আসরের সেরা প্লেয়ার, সবই যে তিনি! মেসি কতোটা চেয়েছিলেন একটা ট্রফি জিততে তার প্রমাণ এসব চিত্র।
তার সতীর্থরাও কম যান নি। বছরখানেক আগে কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি বলেছিলেন, আমরা জিততে চাই শুধুমাত্র মেসির জন্য। সতীর্থ পারেদেস, দি মারিয়া, অ্যাগুয়েরো হয়ে ক’দিন আগে অভিষেক হওয়া এমি মার্টিনেজ পর্যন্ত বলেছিলেন, মেসির জন্য আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। অধিনায়কের প্রতি সতীর্থদের অপরিসীম ভালোবাসা ফুল হয়ে ফুটিয়েছে একটি ট্রফি।
তাই তো ম্যাচশেষে সবাই ছুটে গেছেন তার কাছে। অশ্রুসজল কোচ জড়িয়ে রেখেছেন দীর্ঘসময়। সতীর্থরা আকাশে ছুঁড়ে লিওনেল মেসিকে যেন বলে দিতে চাইলেন, তুমি আমাদের কাছে আকাশসমান মহান।