সুইডেনের আশ্চর্য নীতি; ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে করোনাকে হারাও’
লকডাউন বা জরুরি অবস্থা নয় বরং সুইডেন তার নাগরিকদের সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার চর্চা করতে উৎসাহিত করে। পাশাপাশি নানামুখী ব্যবস্থাও নিয়েছে।
৫০ জনের বেশি জনসমাগম বন্ধ, মদের দোকানগুলোতে ঝাঁপ ফেলে দেওয়া, হাইস্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দূরশিক্ষণের ব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
সুইডিশ কর্তৃপক্ষ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের মূল অস্ত্র হার্ড ইমিউনিটি হচ্ছে, একটি জনপদের অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষের শরীরে ভাইরাস থাকবে কিন্তু জীবাণুটি মানুষকে আক্রমণ করতে পারবে না-এমন এক ব্যবস্থা। অর্থাৎ শরীর একটি অক্ষম ভাইরাসকে ধারণ করবে।
সুইডেনের মহামারি বিষয়ক প্রধান বিষেশজ্ঞ অ্যান্ডর্স টেগনেল বলেন, স্টকহোমের মানুষ সম্ভবত এই মাসেই এই হার্ড ইমিউনিটি অর্জনে সক্ষম হবে। স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত শাস্ত্রবিদ টম ব্রিটন মনে করেন, রাজধানীর ৪০ শতাংশ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা গেলেই মধ্য জুনের মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব।
করোনায় সুইডেনে মৃত্যুর হার এখনো বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন বা যুক্তরাজ্যের চেয়ে কম। অর্থনীতিও সচল। তবে বয়স্কদের রক্ষা করতে পারছে না তারা। এর জন্য অবশ্য মাস্ক পরার মতো প্রাথমিক কিছু বিষয়ে অবহেলা করাকে দায়ী করেন টেগনেল।
তবে এখনকার পরিস্থিতিতে বহু দেশ সুইডেনের এই কৌশল গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। কারণ আজীবন লকডাউন অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ড স্কুল খুলে দিয়েছে। একই পথে হাঁটছে জার্মানিও। আরো আছে ইতালি, ফ্রান্স এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও।
তবে সুইডিশ দৃষ্টান্ত অনুসরণ করাই যে খুব সহজ হবে, তা নয়। নাগরিক হিসেবে এ জাতি সভ্য এবং সরকারের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই। সরকারি নির্দেশ মেনে চলাকেই তারা স্বাভাবিক বলে মনে করে। পাশাপাশি অন্য যে কোনো দেশের নাগরিকের তুলনায় তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারি।