fbpx
হোম অনুসন্ধান হজ নিবন্ধন: দালাল চক্র থেকে সাবধান
হজ নিবন্ধন: দালাল চক্র থেকে সাবধান

হজ নিবন্ধন: দালাল চক্র থেকে সাবধান

0

আজ থেকে শুরু হয়েছে বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় হজ নিবন্ধন। চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। এ বছর ৬৩৬টি এজেন্সিকে সরকার অনুমোদন দিয়েছে হজ পরিচালনার। দুর্নীতি এবং অনিয়ম দূর করতে সরকার বেশ কিছু সতর্ক প্রদক্ষপ গ্রহণ করেছে। মধ্যস্বত্বভোগী দালাল চক্রের সাথে সবধরনের লেনদেন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে ধর্মমন্ত্রণালয়।

পরিচালক হজ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, কোন অবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগীদের হজ যাত্রী নিবন্ধন করা যাবে না। হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেছেন, হজ যাত্রীরা যেন মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে নিবন্ধন থেকে বিরত থাকেন। হজ এজেন্সি মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর হজ নিবন্ধন শুরু হলে এক শ্রেণীর দালাল অনুমোদিত হজ এজেন্সিকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে হজ যাত্রীদের নিবন্ধন করিয়ে নেয়। পরবর্বীতে এসব দালালরা হজ যাত্রীদের সাথে প্রতারণা করে। এমনকি হজ এজেন্সির কমিশন নিয়ে ঝামেলা করে। মধ্যস্বত্বভোগী দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেক হজ এজেন্সি সরকারের কালো তালিকাভূক্ত হয়েছে।

এমনই এক প্রতারক মধ্যস্বত্বভোগী মাওলানা মাশুক রেজা’র বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন হজ ব্যবসা করলেও তার নিজের কোন হজের লাইসেন্স নেই। অন্যের লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করে নিজে বিত্তশালী হয়েছেন। অভিযোগ আছে, তার প্রতারণার বলি হয়ে সর্বস্ব খুয়েছেন প্রকৃত হজ ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে হজ ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। ২০১৭ সালে মাশুক হজে লোক পাঠান রিয়েল ট্রাস্ট হজ এজেন্সির মাধ্যমে। ১৫০ হাজির নিবন্ধনের জন্য কমিশন বাবদ প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পায় এজেন্সির মালিক সৈয়দ ময়নাল হোসেন। দীর্ঘদিন দেই দিচ্ছি বলে মাশুক ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার একটি চেক দেন ময়নাল হোসেনকে। কিন্ত বারবার ব্যাংকে চেক ডিজঅনার হয়। পরে তিনি আদালতে মামলা ঠুকে দেন। ঐ মামলায় ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে গেলে, মাশুক উল্টো তার লোকজন নিয়ে হামলা চালায় পুলিশের ওপর। পরে পুলিশ মাশুকসহ তার ভাই মাসুম বিল্লাহ, ভগ্নিপতি মাসুদ এবং ম্যানেজার আবুবকরের বিরুদ্ধে মামলা করে। ঐ মামলায় মাশুকসহ আসামীদের রিমান্ডে আনে পুলিশ।

ভুক্তভোগী ময়নাল হোসেন বলেন, অনেক বিশ্বাস করে এজেন্সির পাসওয়ার্ড দিয়েছিলাম। কিন্ত মাশুক আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করে। চাতুরতার আশ্রয় নিয়ে ব্যবসায়িকভাবে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ২০১৮ সালে হজ করতে যান সলিমুল মিয়া (ছদ্ম নাম)। ভিআইপি সুবিধা দেয়া হবে, কাবা শরীফ থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বে বাড়ী ভাড়া হবে। এমন নানা আকর্ষনীয় সুযোগ সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাশুক রেজা সলিমুলকে হজে নিয়ে যান। কিন্ত প্রতিশ্রুতির কোনটি পূরণ হয়নি হজের সময়। দেশে ফিরে এ নিয়ে ধর্ম মন্ত্রনালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। আর এ অভিযোগে “মুুনমুন ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস” হজ এজেন্সির লাইসেন্স স্থগিত করে মন্ত্রণালয়। বিপাকে পড়েন মুনমুনের মালিকরা। কারণ মাশুক ঐ হাজিকে মুনমুন হজ এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধন করিয়েছিলেন।

এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মাশুক রেজার প্রতারণার দায় এখন তাকেই বহন করতে হচ্ছে। ক্ষতিপূরণ দূরে থাক উল্টো জালিয়াতি করে এজেন্সি মালিক দাবি করে, নিজের অফিসের সাইনবোর্ডে মুনমুনের নাম ব্যবহার করে মানুষকে ধোকা দিচ্ছে মাশুক। ২০১৯ সালে মাশুক সাবিলুল জান্নাত নামে একটি এজেন্সির মাধ্যমে হজে লোক পাঠান। প্রায় ২৩৪ জন হাজীকে তিনি নিবন্ধন করান সাবিলুল জান্নাতের মাধ্যমে। কমিশন বাবদ সাবিলুল জান্নাতকে ১১ লাখ টাকা দেয়ার কথা থাকলে এখন পর্যন্ত ১১ টাকাও পরিশোধ করেনি মাশুক রেজা। এমন অভিযোগ করে সাবিলুলের মালিক হাফিজুর রহমান বলেন, মাশুকের মতো এমন প্রতারকের খপ্পরে যেন আর কেউ না পড়ে।

মারওয়া হজ এজেন্সের মালিক মাহবুবুর রহমান জানান, মাশুকের কাছে টাকা পান তিনি। কিন্তু বছরের পর বছর ঘুরালেও টাকা ফেরত দিচ্ছে না। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক নামের হজ এজেন্সি মাশুকের প্রতারণার জালে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন। পল্টনের অফিস ছেড়ে এজেন্সির মালিক মাহফুজ বিন সিরাজ হজ ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।

পরিচালক হজ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, অনুমোদিত হজ এজেন্সিগুলোকে নোটিশ দেয়া হয়েছে মাওলানা মাশুক রেজার মতো দালালদের থেকে সাবধান থাকতে। মধ্যসত্বভোগী দালালদের কারণে বাংলাদেশ বা মক্কা-মদিনা অংশে কোন সমস্যা তৈরী হলে এর দায় দায়িত্ব ঐ এজেন্সিকেই নিতে হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
3

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *