fbpx
হোম রাজনীতি নৌকা নয় ব্যক্তির বিরোধিতা করছি
নৌকা নয় ব্যক্তির বিরোধিতা করছি

নৌকা নয় ব্যক্তির বিরোধিতা করছি

0

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। প্রথম উপনির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে চারবারের এমপি তিনি। তার জয়রথ ঠেকাতে এই আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে চন্দকে ঠেকাতে ভোটে নেমেছেন তিনি।
এমপির কর্মকা-ে আওয়ামী লীগের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরাই আকরামের সমর্থনে মাঠে আছেন। তারা এমপির ‘অজনপ্রিয়তা’কে পুঁজি করেছেন। তাতে ভোটারও কেন্দ্রে আসবে বলে তারা মনে করছেন। এমনও একজন খর্নিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নারায়ণ মল্লিক প্রশ্ন করে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের দলের ধারক-বাহক-আদর্শের মূর্ত প্রতীক বঙ্গবন্ধুতনয়া যে নির্দেশ দেন, আমরা সেটাকে অনুসরণ করব না? কিন্তু সেই নির্দেশকে অমান্য করে বিগত উপজেলা নির্বাচনে আলাদাভাবে ঘোড়ার পক্ষে উনি (নারায়ণ চন্দ্র চন্দ) কাজ করেছেন। নৌকা করতে গিয়ে আমাদের মতো মানুষকে মেরেছেন। সেই ব্যথা এখনো পায়ে আছে। হাঁটতে পারি না। আমরা নির্যাতিত। নিপীড়িত।’
তিনি বলছিলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট করতাম না এবারও। যদি নির্দেশ না থাকত। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, যে ভোটার টানতে পারবে, সে-ই আমার কাছে প্রিয় নেতা।’
খর্নিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ কর্মী শেখ আকরাম ভাই দাঁড়িয়েছেন। তাই ডুমুরিয়ার প্রতিটি ইউনিয়নে ৮০ শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট দেবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আকরামের দিকে লোকজন ঝুঁকে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের কারিগর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সুযোগটা করে দিয়েছেন।’ নারায়ণ চন্দ্রকে ‘দুঃশাসক’ উল্লেখ করে তৃণমূল আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘দুঃশাসন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সুযোগ পেয়েছে এলাকাবসী। শেখ হাসিনা সুযোগ দিয়েছেন দলীয় প্রার্থী দিয়ে। আরেকজন প্রার্থী স্বতন্ত্রকে বলেছেন, যাও গণমানুষের কাছে যাওকে নেতা মানুষের মাঝখান থেকে উঠে আসো। সেই হবে আমার দলের, আমার নেতা। তাই আমরা নৌকার বাইরে কাজ করতে পেরেছি।’
স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে নৌকার বিরোধিতা করছেন এটা মনে করেন না নারায়ণ মল্লিক। তিনি দাবি করেন, ‘খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগ নৌকার বিরোধিতা করছে না, আমরা ব্যক্তির বিরোধিতা করছি। নৌকার বিরোধিতা করার সেই সৎ সাহস নাই, এই ৭১ বছর বয়সে।’
এলাকাবাসীর এমপির ওপর ক্ষোভের কথা জানিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান এমপিকে রাস্তাঘাটে কোথাও পাওয়া যায় না। আমি তৃণমূলের রাজনীতি করি। জনগণের কাছে আমি থাকি, না পাওয়ার কৈফিয়ত আমাকে দিতে হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দিয়ে যদি এলাকার মানুষের সেই কাজটুকু হয়, সেই আশায় বুক বেঁধে নির্বাচনে নেমেছি।’
এই আসনের বর্তমান এমপি মানুষের সঙ্গে মেশে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উনি গাড়িতে যান। গাড়িতে ঘোরেন। গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষ যারা আওয়ামী লীগের বন্ধু উনি তো নেমে জিজ্ঞেস করতে পারেন। এই তোরা কেমন আছিস? উনি আজ পর্যন্ত এমপি হওয়ার পর গাড়ি থেকে নামেননি। এইটাই চরম ব্যর্থতা ওনার।’
নারায়ণ মল্লিকের ভাষায়, ‘এমপি চন্দর সঙ্গে দেখা করতে হলে, কাজে প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে ওনার বাসায় যেতে হয়। চন্দ্র ব্যক্তি লীগ করেন। এটাও তার অজপ্রিয় হয়ে ওঠার প্রধান কারণ।’
বর্তমান এমপি নৌকার প্রার্থী। কিন্তু তার জন্য ভোট নেই, তাতে কষ্ট লাগে জানিয়ে খর্নিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘কষ্ট লাগে। কী করব? জনগণের বিপরীতে আমি তো চলতে পারি না। চলতাম, যদি নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাদের এই সুযোগ করে না দিতেন।’
৫০ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতি করেন জানিয়ে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি আমি চুকনগর। ’৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন চলে তখন। সাতক্ষীরা থেকে মিটিং করে যাচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তখন আমি ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী। পদ্মপাতায় নৌকা উপহার দিয়েছি তার হাতে। ওনাকে দেখেছি। ওনাকে (বঙ্গবন্ধু) ভুলতে পারি নাই।’
খুলনার ৬টি আসনের দুই থেকে তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী পাস করবেন দাবি করে নারায়ণ মল্লিক বলেন, খুলনা-৪ ও ৫। সংসদ সদস্যরা মানুষের সঙ্গে মেশেনি বলেই খুলনাসহ অনেক এলাকায় নৌকা নিয়ে জিতেও তারা অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। নেত্রীর উন্নয়ন মানুষের কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
নৌকার বাইরে গিয়ে কেন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন জানতে চাইলে খর্নিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জানান, ‘খুলনা-৫ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম ফুলতলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ফুলতলা উপজেলার চারবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ওনার পরিবারে ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে এ আসনের মানুষ আকৃষ্ট হয়েছে তার প্রতি।’ তার দাবি, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। উনি অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *