নাগরিকত্ব না দিলে ফিরবে না রোহিঙ্গারা, বিক্ষোভ
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে এবার দ্বিতীয়বারের মতো কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন মিয়ানমারের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল। একই সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আহা সেন্টারের একটি প্রতিনিধি দলও প্রত্যাবাসন বিষয়ক আলোচনা করতে ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন। ২৭ জুলাই (শনিবার) দুপুর ১টার দিকে তাঁরা উখিয়ার এক্সটেনশন ক্যাম্প-৪ এ পৌঁছেন।
মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে শনিবার সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ৩৫ সদস্যের রোহিঙ্গাদের একটি অংশ। অপর পাশে মিয়ানমারে নাগরিত্ব দিয়ে প্রত্যাবাসন দাবীতে বিক্ষোভ করছেন তাদের আরেকটি অংশ। দ্বিতীয় দফায় বিকেল সাড়ে ৩টায় আহা সেন্টারের প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ হোছাইন বলেন, প্রতিনিধি দলকে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন, নিজ বসতভিটা ফেরত পাওয়া, নাগরিকত্ব প্রদান ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণসহ সুনির্দিষ্ট দাবী তুলে ধরা হয় । এছাড়াও তাদের উপর বর্বরোচিত নির্যাতন থেকে প্রাণভয়ে কীভাবে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তা বর্ণনা করেন। তারা মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের বিচার দাবী করেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, শনিবার দুপুর একটার দিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল উখিয়ার ক্যাম্প এক্সটেনশন-৪ এ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। একই দিন বিকেলে রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। আজ রোববার বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
২ দিনের সফরে আহা সেন্টার ও মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ রাখাইনে ফেরাতে আলোচনা করেছেন। মিয়ানমার সরকার তাদের জন্য যেসব কাজ করছে, সেগুলো তুলে ধরবেন ও শরণার্থীদের সর্বশেষ পরিস্থিতি ঘুরে দেখবেন বলেও যোগ করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।
মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের সাথে ছিলেন ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দোজা, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরীসহ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
গত ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট পরবর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ৬ হাজার একর পাহাড়ে ৩০টি শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থান করছে। বিশাল এই জনগোষ্ঠিকে ফেরত পাঠাতে এর আগে দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। যদিও তা বাস্তবায়নে আলোর মুখ দেখেনি এখনো।