fbpx
হোম অন্যান্য সাভারে করোনায় আক্রান্ত যুবকের কাণ্ডে দিশেহারা প্রশাসন !
সাভারে করোনায় আক্রান্ত যুবকের কাণ্ডে দিশেহারা প্রশাসন !

সাভারে করোনায় আক্রান্ত যুবকের কাণ্ডে দিশেহারা প্রশাসন !

0

করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হলে যেখানে বাবার কাছেও সন্তান যাচ্ছে না, সেখানে ব্যতিক্রমী ঘটনার নজির তৈরি করলো সাভার !

করোনা আক্রান্ত এক যুবকের পেছনে পেছনে ছুটছেন সবাই। তার পিছু নিতে নিতে রীতিমতো গলদঘর্ম প্রশাসন। বিব্রত তার পরিবারের সদস্যরাও। ওই যুবকের কারণে হয়রানির শিকার এখন গোটা এলাকা। তারপর এটি লকডাউন করা হলেও এখন যুবকের কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণে তার পরিবারের সদস্যরা পড়েছে বেকায়দায়।

কারোনা আক্রান্ত হবার খবরটি চাউর হতে না হতেই গা ঢাকা দিয়েছে ওই যুবক। তারপর থেকেই বেড়েছে প্রশাসনের ব্যস্ততা। গলদঘর্ম হয়ে প্রশাসন তার পিছু পিছু ছুটেও নাগাল পায়নি এখনো। ওই যুবকের দেয়া মোবাইল নাম্বার ট্র্যাক করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে তিনি অবস্থান করছিলেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া এলাকায়।

তার কললিস্ট ঘেঁটে দেখা গেছে, জনবহুল এলাকাতে ওই যুবক ছুটে চলেছেন সেই সঙ্গে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে অনেকেই সংক্রমিত করে চলেছেন করোনা ভাইরাসে।
শেষ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন ওই রোগীর নাম ঠিকানা প্রকাশ করে তাকে ধরিয়ে দেবার আহ্বান জানিয়েছে।

সাভার পৌরসভার সীমানা সংলগ্ন সাভার ইউনিয়ন এর চাপাইন মহল্লার সেলিম হোসেন (৩২) নামের ওই যুবক ঠিকানায় প্রযত্নের ঘরে লিখেছেন রিয়াজউদ্দিন।
রিপোর্ট পজিটিভ আসার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই বাড়িটি খুঁজে বের করে লক ডাউন করলেও লাপাত্তা ওই যুবক।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা .মোহাম্মদ সায়েম হুদা ওই যুবকের স্বেচ্ছা অন্তর্ধানকে ঘিরে নিজের ফেসবুকে তার নাম পরিচয় তুলে ধরে বিশাল একটি পোস্ট দিয়েছেন।

‘‘কবে আমরা মানুষ হবো ?

ইচ্ছে ছিল না লিখার, ইচ্ছে ছিল না আক্রান্ত ব্যক্তির নাম সহ প্রকাশ করার, কিন্তু বাধ্য হয়ে জনস্বার্থে আমাকে কাজটি করতে হলো তার জন্য প্রথমে দুঃখ প্রকাশ করছি। দেখুন অনেকে আমাদের কাছে আসেন আমরা আপনার তথ্য নিয়ে ফরম ফিলাপ করে আপনার মোবাইল নাম্বার সংরক্ষণ করে ল্যাবে পাঠাই। তারপর যখন পজেটিভ কেস হয় আমরা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে দেখি মোবাইল ফোন বন্ধ, স্যাম্পল দেওয়ার পর থেকে মোবাইল ফোন আর খোলা হয় না,যে বাসার ঠিকানা দিয়ে যান সরেজমিনে দেখা যায় ঐ এলাকায় আপনি থাকেনই না, কেউ  আপনাকে চিনে না তারপরও আমরা তাৎক্ষণিক আমাদের প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ওই এলাকার লক ডাউন করে রাখি এবং আশেপাশের স্যাম্পল কালেকশন করতে থাকি।

কিন্তু কেন বুঝতে পারছেন না আপনি ফোন বন্ধ করে মৃত্যুর দিকে নিজে হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকলে আমরা আপনাকে সরকারি হাসপাতালে পাঠাতে পারবো, প্রয়োজনে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারব এবং আমাদের মেডিসিন কনসালটেন্ড রয়েছেন, আমাদের মেডিকেলঅফিসার ডিজিজ কন্ট্রোল রয়েছেন, আমাদের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আছেন আমরা সবাই মিলে আপনাদেরকে আমাদের মেডিসিন কনসালটেন্টের সহযোগিতা নিয়ে বাসায় রেখেও সেবা দিতে পারব। কিন্তু কেন এ কাজটি করছেন?

অনেকে তথ্য ফরমে মিথ্যা ভুল তথ্য দিচ্ছেন আপনার ঠিকানা অন্য এলাকায় আপনি দিচ্ছেন এক এলাকায় আমাদের পুলিশ প্রশাসন আপনাদের খুঁজে পাচ্ছেন না অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।

এখন থেকে নমুনা সংগ্রহ করার সময় যা লাগবে
১)  আপনার ভোটার আইডি কার্ড
২) আপনার মোবাইল সাথে আপনার পরিবারের একজনের মোবাইল নাম্বার অবশ্যই থাকতে হবে আমরা কল দিয়ে চেক করে আপনার নাম অন্তর্ভুক্ত করব।
৩) বাড়া বাড়িতে থাকলে বাড়িওয়ালার মোবাইল নাম্বার
৪) প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

বিঃদ্রঃ যার পজেটিভ তাকে আমরা খোঁজে পাচ্ছি না,পুলিশ এলাকা লকডাউন করে রেখেছে, প্লিজ তাকে ধরিয়ে দিন, আমরা তাকে শাস্তি দিব না, সেবা দিব।”

 

এ বিষয়ে তিনি জানান, এটা আমাদের সঙ্গে রীতিমতো প্রতারণা।এখন থেকে আমরা নমুনা প্রদানকারীর নম্বরের সঙ্গে তার স্বজনদের নম্বর অন্তর্ভুক্ত করবো এবং সে নম্বরটি সঠিক কিনা তা চেক করে তারপরে নমুনা পাঠাবো। এভাবে একজন লোক পালিয়ে বেড়াচ্ছে না শত শত লোককে সংক্রমিত করে যাচ্ছেন এটা কল্পনা করতে গা শিউরে ওঠে-যোগ করেন ডা.মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা।

সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম সায়েদ জানান, যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে সরকার সুন্দর সহনীয়তা নীতি অবলম্বন করেছে সেখানেই যুবক কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

সচরাচর একজন আক্রান্ত হলে তিনি যাদের সাথে ওঠাবসা করেন সকলকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়, এটা নিশ্চিত হতে যে, কেউ আক্রান্তের সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হয়েছেন কিনা ! উল্টো এই যুবক মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাচ্ছেন। আমরা জানতে পেরেছি, সর্বশেষ তারা অবস্থান ছিল ধামরাইয়ের গাংগুটিয়ায়।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সাভার ও ধামরাইয়ের পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকেরা গলদঘর্ম হয়ে খুঁজছিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই যুবককে।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *