যুদ্ধ বাধলে পাকিস্তানকে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে ভারত
যুদ্ধ বাধলে পাকিস্তানকে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে ভারত। ইসলামাবাদ কাশ্মীরে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশে সহায়তা করছে বলেও অভিযোগ নয়াদিল্লির। তবে ভারতই উস্কানি দিয়ে যুদ্ধ লাগাতে চাইছে বলে পাল্টা অভিযোগ পাকিস্তানের। এমন উত্তেজনার মধ্যেই দুই দেশের কূটনীতিকদের বৈঠক হয়েছে।
কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে কারফিউ রাজির একমাস পার হলেও স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। এখনও দোকানপাট বন্ধ, পুরোপুরি সচল হয়নি শিক্ষা কার্যক্রমও। বিচ্ছিন্ন রয়েছে টেলিফোন সংযোগ। এরমধ্যেই সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমে আহত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত একমাসে নরেন্দ্র মোদি প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে ৫ জনের মৃত্যু হলো।
এক কাশ্মীরি বলেন, একমাস হয়ে গেলেও কিছুই পরিবর্তন হয়নি। কেউ বলতে পারছে না কখন স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে পাবো। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। কারও কোনো খবর নিতে পারছি না। এভাবে কি বেঁচে থাকা যায়?
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযোগ, কাশ্মীরে বিক্ষোভ উস্কে দিচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তান জঙ্গি অনুপ্রবেশে সহায়তা করে উপত্যকার শান্তিভঙ্গ করতে চাইছে বলে জানান ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেজিএস ধিলোন।
পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই জঙ্গিদের মদদ দিচ্ছে বলেও দাবি করা হয়।
ধিলোন বলেন, গত ২১ আগস্ট কাশ্মীর থেকে দুই জঙ্গিকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা পাকিস্তানের বাসিন্দা এবং লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য। পাকিস্তান একটি জঙ্গি রাষ্ট্র। তারা আমাদের শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে জঙ্গিদের ভারতে পাঠাচ্ছে। এমন চলতে থাকলে ইসলামাবাদকে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জবাব দেয়া হবে জানান তিনি।
পাকিস্তানও ছেড়ে কথা বলেনি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর জানিয়েছেন, কাশ্মীরের স্বাধীনতার আন্দোলনে যে কোনো মূল্যে সহায়তা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, কাশ্মীরিদের জানিয়ে দিতে চাই, আমরা তাদের পাশে আছি, পাশে থাকবো। দুঃখজনক বিষয় হলো তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। কাশ্মীর নিয়ে ভারত যুদ্ধের বীজ বপন করছে। তবে আমরা দ্বন্দ্বকে সেই পর্যায়ে নিতে চাই না যেখানে আঞ্চলিক ও বিশ্ব শান্তি বিপন্ন হয়।
চলমান উত্তেজনার মধ্যেই পাঞ্জাব সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কারতারপুর করিডর নিয়ে আলোচনা হয়। অক্টোবর থেকে এ সীমান্ত চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
একমাস ধরে কারাবন্দী আছেন জম্মু কাশ্মীরের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা। অভিযোগ উঠেছে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হচ্ছে না। এতে অঞ্চলটির গুমোটভাব যেন কাটছেই না। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।