fbpx
হোম অন্যান্য মহানবী (সা.) এর যে চিঠি পারস্যের পতন ত্বরান্বিত করেছিল !
মহানবী (সা.) এর যে চিঠি পারস্যের পতন ত্বরান্বিত করেছিল !

মহানবী (সা.) এর যে চিঠি পারস্যের পতন ত্বরান্বিত করেছিল !

0

সপ্তম হিজরির জমাদিউল আউয়াল মাসে নবীজি (সা.) কিসরার বাদশাহ পারভেজের কাছে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। চিঠিটি কিসরা পারভেজকে পড়ে শোনানোর পর সে তা ছিঁড়ে ফেলে এবং ঔদ্ধত্যভরে বলে, আমার প্রজাদের মধ্যে একজন সাধারণ প্রজা নিজের নাম আমার নামের আগে লিখেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ খবর পাওয়ার পর বলেছিলেন, আল্লাহ তাআলা তার বাদশাহি ছিন্নভিন্ন করে দিন। এরপর তাই হয়েছিল, যা রাসুল (সা.) বলেছিলেন।

পারস্য সম্রাট ইয়েমেনের গভর্নর বাজানকে লিখে পাঠায়, তোমার ওখান থেকে তাগড়া দুজন লোককে পাঠাও, তারা যেন হেজাজে গিয়ে সে লোককে (নবীজিকে) আমার কাছে ধরে নিয়ে আসে। বাজান সম্রাটের নির্দেশ পালনের জন্য দুজন লোককে তার চিঠিসহ আল্লাহর রাসুলের কাছে প্রেরণ করে। সে চিঠিতে প্রেরিত লোকদ্বয়ের সঙ্গে কিসরার কাছে হাজির হওয়ার জন্য রাসুল (সা.)-কে নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের একজন বলল, শাহেনশাহ এক চিঠিতে বাজানকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন আপনাকে তার কাছে হাজির করা হয়। বাজান আমাদের আপনার কাছে পাঠিয়েছেন। কাজেই আপনি আমাদের সঙ্গে পারস্যে চলুন। সঙ্গে সঙ্গে উভয় আগন্তুক হুমকিপূর্ণ কিছু কথাও বলে। রাসুল (সা.) শান্তভাবে তাদের বলেন, তোমরা আগামীকাল দেখা করো।

এদিকে মদিনায় যখন এ মনোজ্ঞ ঘটনা চলছে, ঠিক তখন পারস্যে খসরু পারভেজের পারিবারিক বিদ্রোহ-কলহ তীব্র রূপ ধারণ করে। কায়সারের সৈন্যদের হাতে পারস্যের সৈন্যরা একের পর এক পরাজয় স্বীকার করে যাচ্ছিল। এ অবস্থায় পারস্য সম্রাট কেসরার পুত্র শেরওয়ায়হ পিতাকে হত্যা করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। সময় ছিল মঙ্গলবার রাত, সপ্তম হিজরির ১০ জমাদিউল আউয়াল (ফতহুল বারি, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১২৭)

রাসুলুল্লাহ (সা.) ওহির মাধ্যমে এ খবর পেয়ে যান। পরের দিন সকালে পারস্য সম্রাটের প্রতিনিধিদ্বয় আল্লাহর রাসুলের কাছে এলে তিনি তাদের এ খবর জানান। তারা বলল, আপনি এসব আবোলতাবোল কী বলছেন? এর চেয়ে মামুলি কথাও আমরা আপনার অপরাধ হিসেবে গণ্য করছি। আমরা কি আপনার এ কথা বাদশাহর কাছে লিখে পাঠাব! রাসুল (সা.) বললেন, হ্যাঁ, লিখে দাও। সঙ্গে এ কথাও লিখে দাও, আমার দ্বিন এবং আমার হুকুমত সেখানেও পৌঁছাবে, যেখানে তোমাদের বাদশাহ পৌঁছেছে। শুধু তা-ই নয়, বরং এমন জায়গায় গিয়ে থামবে, যার আগে উট বা ঘোড়া যেতে পারে না। তোমরা তাকে এ কথাও জানিয়ে দিয়ো, যদি তোমরা মুসলিম হয়ে যাও, তবে যা কিছু তোমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সেসব আমি তোমাদের দিয়ে দেব এবং তোমাদেরই গোত্রের বাদশাহ করে দেব।

উভয় দূত এরপর মদিনা থেকে ইয়েমেনে বাজানের কাছে গিয়ে তাকে কথা জানায়। কিছুক্ষণ পরই ইয়েমেনে এক চিঠি এসে পৌঁছায়, শেরওয়ায়হ তার পিতাকে হত্যা করে সিংহাসনে আরোহণ করেছেন। নতুন সম্রাট তার চিঠিতে ইয়েমেনের গভর্নর বাজানকে এ নির্দেশও দিয়েছেন, আমার পিতা যার সম্পর্কে লিখেছিলেন, পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তাকে বিরক্ত করবে না।

এ ঘটনায় বাজান ও তাঁর পারস্যের বন্ধু-বান্ধব, যারা সে সময় ইয়েমেনে উপস্থিত ছিল, সবাই মুসলিম হয়ে যান। (মোহাদারাতে খেজরি, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৪৭; ফাতহুল বারি, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১২৭-১২৮)

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *