বিয়ের দাবি করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার
করোনার প্রভাবে সারাদেশে যখন লকডাউন চলছে, তখনও থেমে নেই, প্রেম-ভালবাসা আর ভালবাসার মানুষকে কাছে পাওয়ার আকুতি।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের রায়পুরা গ্রামে। সোমবার (৬ মার্চ, ২০২০ ইং) সকালে রায়পুরা গ্রামের আবুল বাশার বশ্যার ছেলে বেলাল হোসেনকে বিয়ে করার দাবি নিয়ে তার বাড়ীতে আসে পাশের ডায়া গ্রামের মরহুম ফজু শেখের মেয়ে মোমেনা খাতুন (২২)। এসময় প্রেমিকা মোমেনার উপস্থিতি টের পেয়ে প্রেমিক বেলাল পালিয়ে গেলে তার পরিবারের সদস্যরা মোমেনাকে ব্যাপক মারপিট করে। মারপিটে এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মোমেনা। পরে মোমেনার স্বজনরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এর আগে সাংবাদিকদের কাছে মোমেনা জানান, প্রবাসী বেলাল গত দেড় বছর আগে দেশে ফিরেই পরিচয় ঘটে মোমেনার সাথে। মোমেনা স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে ছোট শিশু সন্তান নিয়ে কিছুদিন বাবার বাড়ী পরে সাভার জিরানী বাজারের একটি গার্মেন্টস এ কর্মরত ছিল। এ সময় মোবাইল ফোনে বেলালের সাথে মোমেনার গভীর প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বেলাল মোমেনার সাথে শারীরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরই অংশ হিসেবে বেলাল ও মোমেনা গত ৪ এপ্রিল শনিবার সকালে সাভার জিরানীতে মোমেনার ভাড়া বাসায় যায়। সেখানে বেলাল নিজেকে স্বামী পরিচয় দিলে বাসার মালিকের সন্দেহ হলে তাদের সেখান থেকে বিতাড়িত করে। ঐদিন রাতে কোন উপায় অন্ত না দেখে বেলাল ও মোমেনা ডায়া মোমেনার বাবার বাড়ীতে আসে। প্রতিবেশীরা বিষয়টি টের পেলে স্থানীয় লোকজন বেলালকে অবরুদ্ধ করে। পরে বেলাল মোমেনাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। বিষয়টি বেলালের পরিবার অবগত হয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজনের সহায়তায় গভীর রাতেই কৌশলে বেলালকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
মোমেনার বিধবা মা শহরবানু সাংবাদিকদের জানান, গত রোববার বিচার দেয়ার কথা থাকলেও কারো পক্ষ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে মোমেনা বিয়ের দাবীতে রায়পুরা বেলালের বাড়ীতে গিয়েছিল। কিন্তু বেলালের বাড়ীর লোকজন বর্বরোচিত কায়দায় তার মেয়েকে মেরে রক্তাক্ত করেছে। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তিনি বিয়ের নামে ধর্ষনকারী বেলালের উপযুক্ত বিচার কামনা করেন। এ বিষয়ে মোমেনার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ধর্ষণ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার পর থেকে প্রেমিক বেলালকে এলাকায় দেখা যাচ্ছেনা এমনকি তার মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত নারীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।