বহু বছর পর প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানালো জামায়াত !
বর্তমান রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক সাপ এবং নেউলের মতো । যদিও সংগঠনটি আওয়ামী লীগের সঙ্গে এরশাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন এবং বিএনপি’র বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করেছে । কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগের নেৃতত্বে গঠিত সরকারের মেয়াদ শুরু হবার পর দুই সংগঠনের অবস্থান বরাবরই ছিলো সাংঘর্ষিক। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলায় । তাই শেষ কবে আওয়ামী লীগ, জামায়াতকে এবং জামায়াত, আওয়ামী লীগকে স্বাগত জানিয়েছে তা কেউই জানেনা।
তবে তিন মেয়াদের আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় বছরে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াত। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী যে আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তাকে স্বাগত জানিয়ে যথাযথভাবে তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সোমবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি ও বিধ্বস্ত উৎপাদনমুখী খাতগুলোকে টিকিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রী যে আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন আমরা তাকে স্বাগত জানাই। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৭২,৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনার প্যাকেজটি একটি ঋণের প্যাকেজ। যেখানে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন শর্তে ঋণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্যাকেজে দেশের গুরুত্বপূর্ণ কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা খাত এবং দেশের রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসী যারা করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত তাদের ব্যাপারে এবং দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।
তিনি বলেন, দিন আনে দিন খায় এমন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের শ্রম দিয়ে দেশের জন্য কাজ করে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এসব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তার প্যাকেজে কিছুই বলেননি। আমরা মনে করি প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা খাত এবং প্রবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা উচিত। বর্তমান সংকটের সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে আরো বেশি করে প্রান্তিকভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো দরকার।
তিনি বলেন, অর্থ যোগান দেয়ার দায়িত্ব হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের। ব্যাংকগুলোর অবস্থা মোটেই ভালো নয়। তারল্য সংকটে ভুগছে ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের গৃহীত ও অপরিশোধিত ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা। এ অবস্থায় ব্যাংকগুলোর পক্ষে ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনার টাকা সরবরাহ খুবই কঠিন হবে। তদুপরি কারা অর্থ পাবেন এবং যথাযথভাবে আর্থিক প্রণোদনার অর্থ দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। অনেকেই স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ এবং দুর্নীতিরও আশঙ্কা করছেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সবাই যেন সততার সাথে কাজ করেন। এই সুযোগ নিয়ে কেউ যেন আবার কোনো রকমের দুর্নীতি-অনিয়ম না করেন।’