পৌষের প্রথম দিন আজ…
প্রকৃতিতে শীত এসেছে বহু আগেই। তবে বর্ষপঞ্জিকায় আজই পৌষের প্রথম দিন। বঙ্গাব্দ ১৪২৭-এর শীত ঋতুর প্রথম দিন!
শিশিরভেজা নতুন সকালে আনুষ্ঠানিক সূচনা হলো। গতকাল বিদায় নিয়েছে হেমন্ত। ঋতুর পরিবর্তনে পৌষ আর মাঘ—দু’মাস শীতকাল। পঞ্জিকার হিসাবে আজ শীতের শুরু হলেও ক’দিন ধরেই হিমেল হাওয়ার ঝাপটা আর ঘন কুয়াশা জানান দিচ্ছিল শীতের আগমনীবার্তা।
ঘাসের ডগায়, পাতার কিনারে জমে থাকা স্বচ্ছ শিশিরবিন্দুতে ভোরের সোনালি রোদের স্পর্শ ছড়িয়ে দেয় মনোহর দ্যুতি। মুক্তোদানা বা হীরার কুচির সঙ্গে লোকে তার শোভার তুলনা করে আসছে বহুকাল থেকে। আর শীতের এই রোদ কতই না আদরণীয়—‘মিঠে রোদ’, ‘সোনা রোদ’ ভালোবেসে দেয়া এমন সব তার নাম।
শীতকালের শাকসবজিতে ক্ষেত ভরে যায়। লালশাক, পালংশাক, শিম, বরবটি, লাউ, টমেটো, গাজর, শালগম এবং মুলাসহ নানা রকম সবজি শোভাবর্ধন করে, যা আমাদের খাবার হিসেবে আকৃষ্ট করে। তাছাড়া পিঠাপুলি, অতিথি আপ্যায়ন, যাত্রাপালায় গ্রামীণ জনপদে নির্ভার আনন্দের তরঙ্গ বয়ে যায়। সরিষাফুলের হলুদ ক্ষেত আর মৌমাছির গুঞ্জনের দৃশ্য না দেখলে এই দৃশ্য বোঝানো যাবে না। আর শীতকালের রং-বেরঙের ফুল গাঁদা, ডালিয়া, সূর্যমুখী, গোলাপ প্রভৃতি শোভাবর্ধন করে। ফুলের দোকানগুলো বাহারি ফুলে ভরে যায়।
বাংলাদেশে তুষার পড়ে না। তবু শীতের শুষ্ক রুক্ষতা মৃত্যুর সঙ্গে তুলনীয়। গাছে গাছে মলিন, বিবর্ণ হয়ে আসে পাতা। ফেটে ঝরে পড়ে বাকল। অথচ এই রুক্ষ প্রকৃতিই ফুটিয়ে তোলে রক্তলাল গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, মল্লিকাদের। এত রঙিন ফুলে ভরা মালঞ্চ শীত ছাড়া কার আছে আর!