নুসরাত হত্যা মামলার রায় আজ
সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় আজ। রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশা করেন নুসরাতের পরিবারসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানি করেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। একই দিন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় অভিযোগ দাখিল করলে পুলিশ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে। পরবর্তীতে ৬ এপ্রিল নুসরাতের আলেম পরীক্ষা চলাকালীন কৌশলে নুসরাতকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় তার সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি। ওখানে অপেক্ষায় ছিল বোরকা পরা আরও চারজন। তারা নুসরাতকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। নুসরাত রাজি না হওয়ায় তারা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। আগুনে তার শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।
নুসরাতের মৃত্যুর পর তার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে ফেনীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ২৭ জুন থেকে ৬১ কার্যদিবসে মামলার সাক্ষ্য কার্যক্রম ও যুক্তিতর্ক গ্রহণ করা হয়। মামলায় মোট ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।
নুসরাতের মা শিরিন আক্তার ও ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করায় তাড়াতাড়ি মামলার রায় হতে যাচ্ছে। মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তারা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, আইনে বলা আছে, যারা নারীকে দাহ্য পদার্থ দিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যা করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আশা করি মামলার আসামিরা মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত হবে।