দুই টাকার মাস্ক ৪০ টাকা: ১ লাখ টাকা জরিমানা
করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক যখন চরমে, তখন সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাভারের লাজ ফার্মা নেমেছে মুনাফাখোরের ভূমিকায়।
দুই টাকা মূল্যের সাধারণ মাস্ক বিক্রি করছে ২০ গুণ বেশি দামে ৪০ টাকায়। আর নেপথ্যে থেকে এই কাজটি করছিলেন মাখন। এই মাখন সব সময় প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠ আত্নীয় বলে পরিচয় দেন নিজেকে।এই যুবক রাতারাতি বনে গেছেন বিপুল সম্পদের। ধরাকে সরা জ্ঞান করেই তার চলাফেরা। টেন্ডারবাজী থেকে গেন্ডায় কাঁচা বাজার নিয়ন্ত্রণ। সব কিছুতেই রাতারাতি ব্যাপক পরিচিতি পান এই মাখন। তবে এই মাখনের হম্বিতম্বি শেষ পর্যন্ত কোন কাজেই আসেনি। এক পর্যায় ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহফুজের নির্দেশে পুলিশ তাকে আটক করে ফেলে। তবে শেষ পর্যন্ত জরিমানার ১ লাখ টাকা দিয়ে রক্ষা পান এই মাখন।
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ে সারাদেশ যখন আতংকে উদ্বিগ্ন, তখন এই মাস্ক নিয়েই সাভারে থানা রোডে লাজ ফার্মায় কালোবাজারি ব্যবসা খুলে বসে ছিলো মাখনরা। দুই টাকা মূল্যের নিম্নমানের প্রতিটি মাস্ক বিক্রি করে ৪০ টাকায়। সাভার উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ মাহফুজের নেতৃত্বে মঙ্গলবার সাভার থানা রোডের বিভিন্ন ফার্মেসিতে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। তখন থেকেই শুরু হয় মাখনের হম্বিতম্বি। উপর মহল থেকে এখনই ফোন আসবে। জানেন এই দোকান কার? আমি কে? আমাকে চিনেন- এমন নানা রকম দম্ভোক্তি করে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ ধরে অনেকটা নীরবেই মাখনের এই তামাশা দেখছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ।
অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করে রাতারাতি বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে গেছে এই মাখন। যোগাযোগ করা হলে লাজ ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লুৎফর রহমান জানান, আমি বুঝিনা কত টাকা লাগে এদের। যে নিজেকে হোমরা-চোমরা দের আত্মীয় পরিচয় দেয় তারা এসব অনৈতিক কাজ করে কি করে। তিনি জানান, আমরা কেবল লাজ ফার্মা এই নামটা ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছি। আমরা প্রতিদিনই তাদেরকে সতর্ক করি। না শুনলে আর কি করার। মাখন একজন সন্ত্রাসী- এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন প্রয়োজনে আমি সাভার থানা রোডে লাজ ফার্মা বন্ধ করে দেবো, তবু আমার প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে দেব না। এদিকে লাজ ফার্মা থেকে একই দিন ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বিক্রয় নিষিদ্ধ, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং অনুমোদিত নকল বেশকিছু কসমেটিকস এর নমুনা জব্দ করে নিয়ে যান।