fbpx
হোম বিনোদন ডিপজল–নিপুণ লড়াই: এবার জমছে না শিল্পী সমিতির নির্বাচন
ডিপজল–নিপুণ লড়াই: এবার জমছে না শিল্পী সমিতির নির্বাচন

ডিপজল–নিপুণ লড়াই: এবার জমছে না শিল্পী সমিতির নির্বাচন

0

২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নির্বাচনে ৬ জন স্বতন্ত্রসহ ২টি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্যানেল দুটি হলো মিশা-ডিপজল ও মাহমুদ কলি-নিপুণ। কোলাজ
শুক্রবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪–২৬ মেয়াদি নির্বাচন। বিগত কয়েকটির মতো শেষ মুহূর্তে এসেও খুব একটা জমে ওঠেনি এবারের নির্বাচন।
২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য একটি প্যানেল আবেদন জানালেও অন্য প্যানেলের আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত ১৯ এপ্রিলই হচ্ছে নির্বাচন। ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নির্বাচনে ৬ জন স্বতন্ত্রসহ ২টি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্যানেল দুটি হলো মিশা-ডিপজল ও মাহমুদ কলি-নিপুণ।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। মধ্যাহ্নবিরতি দিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই ভোট। গণনা শেষে ওই দিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
নিরুত্তাপ নির্বাচন
এবারের নির্বাচনটা অনেকটাই নিরুত্তাপ। কাল বাদে পরশু নির্বাচন। এখনো প্রার্থী, ভোটারদের মধ্যে তেমনটা প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে আগের নির্বাচনগুলোতে ভোটার, শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালকসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পদভারে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গমগম করত এফডিসি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মিছিল-স্লোগানে মুখর থাকত এফডিসি প্রাঙ্গণ। শুধু তা–ই নয়, নির্বাচন ঘিরে এফডিসিতে একধরনের উত্তেজনাও ছড়িয়েছে বিগত সময়ে। নির্বাচনের ফলাফল নিয়েও সারা দেশে শিল্পীদের ভক্ত, সমর্থক ও উৎসুক সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ দেখা গেছে। কিন্তু এবারের নির্বাচনের চিত্র ভিন্ন। সাধারণ মানুষের খুব একটা আগ্রহ নেই এবার। তবে এফডিসির মূল ফটক থেকে শুরু করে পুরো আঙিনা প্রার্থীদের রঙিন পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে এফডিসিতে গিয়ে দেখা গেল, শিল্পী সমিতির কার্যালয়ের সামনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের নির্বাচনী প্রচার কার্যালয়, অন্যদিকে সমিতির উত্তরে বাগানে কলি-নিপুণ প্যানেলের প্রচার কার্যালয়। মিশা-ডিপজল প্যানেলের কার্যালয়ে তেমন লোকজন দেখা গেল না। একজন জানালেন, বিকেল থেকে কার্যালয় জমজমাট হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ভরদুপুরে অল্প পরিসরে কলি-নিপুণ প্যানেলের কার্যালয় বেশ জমজমাট। কার্যালয়ের এক পাশে বড় পর্দা টাঙিয়ে ওই প্যানেলের শিল্পীদের পুরোনো দিনের সব জনপ্রিয় গান দেখানো হচ্ছে। লোকজন বসে উপভোগও করছেন।
সেখানে পাওয়া গেল কলি-নিপুণ প্যানেলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী নায়িকা অঞ্জনাকে। নির্বাচন নিয়ে এই নায়িকার বক্তব্য, ‘আমাদের প্যানেলটা সুন্দর হয়েছে। সভাপতি পদে পেয়েছি খুব ভালো মনের মানুষ মাহমুদ কলিকে। আগে থেকেই তাঁর একটা আলাদা ইমেজ আছে। তিনি এর আগে চারবার এই কমিটিতে ছিলেন। নানা কারণেই আমাদের প্যানেল এগিয়ে।’
গত মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে সভাপতি প্রার্থী মিশা সওদাগরের সঙ্গে কথা হয়। প্রচার-প্রচারণা শেষে এফডিসি থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে এই প্রতিবেদককে মিশা বলেন, ‘আশা করছি জিতব। আর না জিতলেও অসুবিধা নেই। আমরা শিল্পীরা একই পরিবার। গতবার হেরেছি। কিন্তু বিজয়ীদের গলায় মালা দিয়েছি। এমনই হওয়া উচিত শিল্পীদের।’
আবারও পুরোনো অভিযোগ
একটি প্যানেলের কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদপ্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্ত বলেন, ‘কিছু কিছু সাধারণ ভোটার একটি প্যানেল থেকে টাকাপয়সা পাচ্ছেন। তবে টাকা ছিটিয়ে লাভ হবে না। তাঁরা টাকা খাবেন কিন্তু ভোটটা ঠিক জায়গায়ই দেবেন।’
টাকা ছড়ানোর ব্যাপারটি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মিশা সওদাগর ও নিপুণ অস্বীকার করেছেন। মিশা বলেন, ‘না, এমন শুনিনি। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখানে কেন টাকাপয়সার খেলা হবে। এটি মিথ্যা প্রচারণা।’
তবে নিপুণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমরা এসব করি না। অন্য প্যানেলের কেউ কেউ করতে পারেন। যদিও হাতেনাতে কোনো প্রমাণ নেই, তবে আমরাও মাঝেমধ্যে এসব শুনি।’
টাকা ছড়ানোর বিষয়টি প্রার্থীদেরই একজন স্বীকার করার কথা মিশাকে বলা হলে তিনি বলেন, ‘কেউ করলে করতে পারে। আমি জানি না। হতে পারে, কোনো প্রার্থী যেকোনো মূল্যে জিতে এসে নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য এটি করছে।’
১৫৩ ভোটেই কি নির্ধারিত হবে জয়-পরাজয়
এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ৫৭১ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার হয়েছেন ৫০ জন। জায়েদ-মিশা প্যানেল ক্ষমতায় থাকাকালে অনেকের ভোটাধিকার বাতিল হয়েছিল। এরপর কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল বিজয়ী হয়ে এসে উচ্চ আদালত থেকে ১০৩ জন ভোটাধিকার ফিরে পান। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন ও ফিরে পাওয়া মিলে মোট ১৫৩ জনের ভোট এবারের নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। একটি প্যানেলের জিতে আসার ক্ষেত্রে সুবিধাও দিতে পারেন এসব ভোটার। এফডিসিতে ঘুরে ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া এমন বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে তেমন আভাসই পাওয়া গেছে। তবে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলেছেন, ভোটের আগের দিন টাকাপয়সার ছড়াছড়ি বেশি হলে চিত্র ভিন্নও হতে পারে। অবশ্য এর উত্তরও কয়েকজন দিয়েছেন। এমন একজন বলেছেন, ‘এসব ভোটারকে টাকা দিয়ে লাভ হবে না। টাকা খাবে কিন্তু বেইমানি করবে না। কারণ, তাদের আবারও ভোটাধিকার হারানোর ভয় আছে।’
কেন ২৭ এপ্রিল ভোট হলো না
নির্বাচন কমিশনের তফসিলে প্রথমে ১৯ এপ্রিল ভোটের দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু ঈদুল ফিতরের ছুটির ফাঁদে তা পিছিয়ে ২৭ এপ্রিল করার দাবি তোলেন অনেকে। নির্বাচন কমিশন তাতে রাজিও হয়। কারণ, ১৯ এপ্রিল ভোট হলে ছুটির পরে এসে প্রার্থীরা প্রচার চালানোর সময় পাবেন না। তা ছাড়া ছুটি কাটাতে যাওয়া অনেক ভোটার এত দ্রুত ঢাকায় ফিরে এসে ভোটও দিতে পারবেন না। কিন্তু মিশা-ডিপজল প্যানেলের দাবির মুখে নির্বাচন কমিশন ভোট পিছিয়ে দেওয়া থেকে সরে আসে।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরাও চেয়েছিলাম, ঈদের পর সময়স্বল্পতার কারণে পিছিয়ে ২৭ এপ্রিল ভোটের তারিখ নির্ধারণ করব। অনেক প্রার্থী, ভোটারেরও দাবি ছিল এটি। কিন্তু সভাপতি প্রার্থী মিশা সওদাগরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেটি করা সম্ভব হলো না। তাঁরা আবেদনে বলেছেন, নির্বাচন পিছিয়ে গেলে খরচ বেড়ে যাবে। পরে সব প্যানেল, সব প্রার্থীর মতামত নিয়েই নির্বাচন পেছানো থেকে সরে আসি।’
এই কমিশনারের ভাষ্য, ‘এবারের নির্বাচন আগের বছরগুলোর মতো না জমার কারণও এটি। অনেকে এখনো ঢাকাতেই ফেরেননি। এ কারণে এবার ভোট পড়ার সংখ্যাও কম হতে পারে।’

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *