fbpx
হোম আন্তর্জাতিক করোনা আক্রান্তদের গুয়ান্তানামো বে পাঠাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প!
করোনা আক্রান্তদের গুয়ান্তানামো বে পাঠাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প!

করোনা আক্রান্তদের গুয়ান্তানামো বে পাঠাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প!

0

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত মার্কিন নাগরিকদের কিউবায় অবস্থিত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি করোনা মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রকাশিত এক বইয়ে এমনটা লিখেছেন দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার দুই সাংবাদিক। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

খবরে বলা হয়, ‘নাইটমেয়ার সিনারিয়ো: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প এডমিনিস্ট্রেশন’স রেসপন্স টু দ্য পান্ডেমিক দ্যাট চেঞ্জড হিস্টোরি’ শীর্ষক বইটি লিখেছেন ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক ইয়াসমীন আবুতালেব ও দামিয়ান পালেত্তা। ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অসংখ্য সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে বইটি লেখা হয়েছে।

বইটিতে তারা লিখেছেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে করোনা ভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত নাগরিকদের বন্দি শিবিরে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প।

সিচুয়েশন রুমে এক কর্মীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমাদের কেনা একটা দ্বীপ আছে না? গুয়ান্তানামো কেমন হবে? তিনি আরো বলেন, আমরা পণ্য আমদানি করি। আমরা কোনো ভাইরাস আমদানি করবো না।

প্রসঙ্গত, গুয়ান্তানামো বে হচ্ছে কিউবায় মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বন্দিশিবির। ৯/১১-এর পরবর্তী সময়ে ‘শত্রু যোদ্ধা’দের আটক রাখতে ২০০২ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এ কারাগার চালু করেন।

সেখানে বন্দিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো নিয়ে কারাগারটির কুখ্যাতি রয়েছে।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, কুখ্যাত ওই বন্দিশিবিরে করোনা আক্রান্ত নাগরিকদের পাঠানোর কথা শুনে চমকে উঠেছিলেন ট্রাম্পের কর্মীরা। পরবর্তীতে ট্রাম্প আবার এই প্রস্তাব তুললে তারা তা নাকচ করে দেন।

নতুন বইটি অনুসারে, করোনা পরীক্ষা নিয়ে ব্যাপক অসন্তুষ্ট ছিলেন ট্রাম্প। গত বছরের ১৮ই মার্চ এ নিয়ে তৎকালীন স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিষয়ক মন্ত্রী এলেক্স আজারকে তিনি বলেছিলেন, ‘(করোনা) পরীক্ষা আমায় মেরে ফেলছে। আমি এই পরীক্ষার জন্য নির্বাচনে হারবো। কোন গর্দভ কেন্দ্রীয় সরকারকে পরীক্ষা করতে বলেছে?’ বই অনুসারে, ট্রাম্প এই মন্তব্য করার পাঁচ দিন আগে তার জামাতা জারেড কুশনার মার্কিন সরকারের করোনা পরীক্ষা কৌশলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এছাড়া, ১৪ জন করোনা আক্রান্ত নাগরিককে একটি প্রমোদতরীতে করে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার অনুমোদন দেয়ায় স্বাস্থ্য ও মানবসেবা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন তৎকালীন সময়ে স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রণালয়ের জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় প্রস্তুতি বিষয়ক প্রধান রবার্ট ক্যাডলেক।

কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরো নানা বিষয়ে ট্রাম্পের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব এলার্জি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিস-এর তৎকালীন পরিচালক অ্যান্থনি ফাউচির সঙ্গে এক দ্বন্দ্বের পর তার ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পরামর্শ অগ্রাহ্য করতে শুরু করে ট্রাম্পের টিম। বই অনুসারে, এর বদলে অর্থনীতিবিদ ও কুশনারের পরামর্শকে বেশি গুরুত্ব দেয়।

করোনার চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার নিয়ে বিপরীত অবস্থানে ছিলেন ট্রাম্প ও ফাউচি। এছাড়া, করোনা ভাইরাস সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নানা বিষয়ে ফাউচির সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

গুয়ান্তানামোয় করোনা রোগী পাঠানো নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের কয়েকদিন পরই যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাস মোকাবিলায় ব্যর্থতার কারণে চরমভাবে সমালোচিত হয় ট্রাম্প প্রশাসন। এখন অবধি যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ। এর মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের আমলেই মারা যান প্রায় ৪ লাখ।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *