৮৬ বছর বয়সী বিজ্ঞানী নিজের বই ফেরি করে বেড়াচ্ছেন
জীবনের ৮৬ বসন্ত পার করে এসে এই বিজ্ঞানী নিজের বই ফেরি করছেন বইমেলায়। তাকে প্রমোট করবার মতো ডাইহার্ড ফ্যানবেজ নেই।
শুরু হয়েছে তারুণ্যের অমর একুশে বইমেলা। সেখানে দেখা যাচ্ছে একজন প্রবীণ লেখক আপন মনে নিজের বই ফেরি করে বেড়াচ্ছেন। জীবনের ৮৬ বসন্ত পার করে এসেছেন। তবুও তিনি বয়সের ভারে ক্লান্ত হননি। বরং তার একাগ্রতায় যেন তারুণ্যকেও হারিয়েছেন।
এই মানুষটা জন্মেছিলেন ১৯৩৪ সালে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার চরমধুচারিয়া গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন শাস্ত্রে অনার্স করেন। থিসিস গ্রুপে এমএসসি ডিগ্রী লাভ করে পোস্ট এমএসসি গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন। ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। অতঃপর তেহরানের নিউক্লীয় বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট থেকে পোষ্ট এমএসসি গবেষণা করেন। সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল নিউক্লীয় ইন্সটিটিউট থেকে পোষ্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন।
এখানেই শেষ নয়। দেশে ফিরে এসে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধীনে এসিস্ট্যান্ট একজামিনার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে নিউক্লীয় শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের উপর দীর্ঘদিন গবেষণা করেন। ১৯৯২ সালে উক্ত সংস্থার নিউক্লিয় বিজ্ঞান ও গবেষণা ইস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি এর রসায়ন শাস্ত্রের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
শুধু তাই নয়, তিনি একাধারে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং গবেষণা করেছেন প্রাক্তন সোভিয়েত রাশিয়া, পূর্ব জার্মানী, চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, গণচীন, জাপানের মতো রাষ্ট্রগুলোতে। রিজিওনাল কো-অপারেটিভ এগ্রিমেন্ট নামক একটি দক্ষিণ এশিয় আঞ্চলিক ফোরামে দীর্ঘ ৭ বছর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তার নিজস্ব গবেষণার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
চলমান অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় প্যাভিলিয়ন পুঠিনিলয়ে তার বই পাওয়া যাবে। বইটির নাম বই ‘বাঙালির জয়, বাঙালির ব্যর্থতা’।