যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিন ট্রায়ালে যুক্ত হলেন বাংলাদেশি চিকিৎসক
বিখ্যাত নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমদের ছেলে তিতাস মাহমুদ । তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। তিনি ফাইজারের ফেইজ থ্রি ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন।
এ নিয়ে তিনি তার ফেসবুকে লিখছেন, করোনা মহামারির শুরু থেকে সবাই অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে আমাদের ‘ফ্রন্ট লাইন হিরো’ বলে আসছেন। এই ঢালাওভাবে বলার ব্যাপারটিতে সত্যিই ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনোই আহ্লাদিত হইনি। কিন্তু আজ করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারে ‘‘ফাইজারের ফেইজ থ্রি ট্রায়াল’’ এর একজন সাবজেক্ট হতে পেরে নিজেকে বেশ ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।
ওরা প্রথমে আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলে আমার পার্সোনাল তথ্যগুলো নেয়, আমার কোনও রোগ আছে কিনা, কোনো ধরনের ওষুধ সেবন করি কিনা। সেসব খুব জরুরি না, কারণ ফেজ-থ্রি ট্রায়ালে ওরা সবধরনের রোগীই থাকুক সেটা চায়। ১৮ থেকে ৮২ বছর বয়সীদের মধ্যে এটি করা হচ্ছে। এরপর তারা আমাকে ই-মেইলে ২৬-২৭ পাতার একটি শর্তনামা পাঠায় যেখানে প্রধান হলো আমি একেবারেই স্বপ্রণোদিত হয়ে স্বেচ্ছায় এতে অংশ নিতে রাজি হয়েছি সেটা ঘোষণা দিতে হবে।
এ বাংলাদেশি বলেন, এসব ডাটা একটা জায়গায় কোড নেমে সংরক্ষিত হবে। যখনই আমি তাদের সাবজেক্ট হলাম, তখনই আমি আর তাদের কাছে কোনও ব্যক্তি না, কোড। এরপর আমার ২৫ মিলিগ্রাম পরিমাণ রক্ত নেওয়া হলো অ্যান্টিবডি টেস্টের জন্য। সেটিও ডাটার কাজে লাগবে। অ্যান্টিবডির কোন পর্যায়ে আমার ট্রায়াল শুরু হচ্ছে সেটা বোঝার জন্য এই পরীক্ষা। এরপর আমাকে একটা ইনজেকশন দেওয়া হয়। এভাবে আমি যুক্ত হই।
আমি আসলে নিজের অসহায়ত্বের জায়গা থেকে যুক্ত হয়েছি। কোভিড রোগীদের জন্য কিছুই করতে পারিনি। কেবল অসহায়ের মতো মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেছি- ভালো হয়ে যাবে। সেই অসহায়ত্বের জায়গা থেকে মনে হয়েছে এর মাধ্যমে যদি বিজ্ঞানকে সহায়তা করতে পারি।
তিতাস মাহমুদ জানান, এই ২৬-২৭ পাতার শর্তাবলী আসলে আমার সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং তাদের করণীয় বিষয়ে জানানো। আমি স্বেচ্ছায় ট্রায়ালে যুক্ত হচ্ছি বলার পাশাপাশি আমি যেকোনও সময় চাইলে যেকোনও স্তরে গবেষণাটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারি, আমার কোনও কাজে সেটির প্রভাব পড়বে না।