মহাসমাবেশের প্রস্তুতি শুরু, এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার পাঁচ শতাধিক: রিজভী
মহাসমাবেশের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মহাসমাবেশ ঘিরে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ঢাকার যে কোনো জায়গা দখল করে কর্মসূচি করছে, আর বিএনপি কর্মসূচি পালন করতে গেলে নানা শর্ত দেওয়া হয়। আগামীকাল বেলা দুইটায় নয়াপল্টনে দলের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে মানুষের ঢল নামবে।
তিনি বলেন, কোনো ধরনের সহিংসতা আমরা বিশ্বাস করি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো, দমননীতি পরিহার করে বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচি সফলে সহযোগিতা করবেন। বিনা কারণে শুধু ভয়-আতঙ্ক ছড়াতে সরকার আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। এটা হলো সরকারের ব্যর্থ প্রচেষ্টা। নেতাকর্মীদের যত গ্রেপ্তার করবেন, ততই কিন্তু আন্দোলন বেগবান হবে। আপনারা যাদের গ্রেপ্তার করেছেন, আমি তাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
রিজভী আরও বলেন, আজকে আমাদের নেতা-কর্মীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। হাতের কব্জি কেটে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় অনেক নেতা-কর্মীকে ক্ষমতাসীনরা আক্রমণ চালাচ্ছে। তবুও আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছি।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, নাজিমউদ্দিন আলম প্রমুখ।
এর আগে বুধবার (২৬ জুলাই) রাতে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে বিএনপির রুহুল কবির রিজভী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বরাবর একটি চিঠি দেন। আজ মহাসমাবেশ করার কথা ছিল বিএনপির। কিন্তু নানা নাটকীয়তা শেষে ২৮ জুলাই নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেয় তারা।
রিজভী জানান, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী ও তার ছেলে ব্যারিস্টার মুনতাহা আলীকে গতকাল বুধবার রাতে তাদের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় আশরাফ আলী দুই পা ভাঙ্গাসহ গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি জানান, ২৮ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস আকন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলসহ প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট।
রিজভী আরও জানান, নয়াপল্টনের কাছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে মিডওয়ে হোটেল ও ভিক্টোরিয়া হোটেলেও অভিযান চালায় পুলিশ। ২৮ জুলাই মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা ৩০০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে তারা।
তিনি জানান, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক চর্চার অংশ হিসেবে সমাবেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে পুলিশের এ ধরনের কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
ইত্তেফাক