fbpx
হোম ক্রীড়া ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য জয় !
ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য জয় !

ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য জয় !

0

ম্যাচ এমন পরিস্থিতিতে ছিল যেখানে বাংলাদেশের পাড়ভক্তও সম্ভবত জয়ের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে ধ্বংসস্তুপের মাঝেই ফিনিক্স পাখির জেগে ওঠার মহাকাব্য রচনা করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই দুজনের ব্যাটেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে টাইগাররা। পেয়েছে মাত্র ১ উইকেটের ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় এক জয়।

রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশি বোলারদের তোপে নির্ধারিত ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি ভারত। ৪১.২ ওভারে অল আউট হওয়ার আগে ১৮৬ রান সংগ্রহ করে টিম ইন্ডিয়া।

এটি বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। জবাবে ৯ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় বাংলাদেশ। বাকি ছিল ২৪ বল। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে টাইগাররা।

অথচ এই ম্যাচ অনেক আগেই জেতার কথা ছিল ভারতের! ১৩৬ রানেই যে ৯ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। জয় থেকে তখনও ৫১ রান দূরে টাইগাররা। এক উইকেট রেখে যে বাংলাদেশ জয়ের বন্দরে নোঙর করতে পারবে, সেটা ছিল না সূদুরতম কল্পনাতেও।

তবে ধৈর্য্য আর বুদ্ধির সংমিশ্রণে ধীর কিন্তু দৃপ্ত পদক্ষেপে এগোতে থাকেন মিরাজ ও মুস্তাফিজ। মাঝে সহজতম ক্যাচ মিস করেন কেএল রাহুল। এরপর আর কোনো ভুল না করে দেশকে অনন্য এক অর্জনই এনে দেন দুই টাইগার।

বাংলাদেশের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন কুমার দাস। দীপক চাহারের প্রথম বলে স্লিপে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ তুলে দেন শান্ত। দলের রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন এ ওপেনার।

একদম শুরুর এই ধাক্কা সামাল দেন লিটন ও আনামুল হক বিজয়। ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনযোগী হন তারা। এরই মাঝে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আঘাত হানেন মোহাম্মদ সিরাজ। ১৪ রান করা বিজয়কে ফেরান তিনি।

ইনিংসের ত্রয়োদশ ওভারে লিটনকে আউট করতে কিছুটা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন রোহিত। এ সময় বোলিংয়ে আসেন ভারতের শাহবাজ আহমেদ। তার করা তৃতীয় ডেলিভারি লিটন দাসের ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে যায়, যা ধরে ফেলেন রোহিত।

এ সময় বলটি তালুবন্দী অর্থাৎ ক্যাচ ধরেছেন এভাবে উদযাপন করেন রোহিত। তবে আম্পায়াররা তার আবেদনে সাড়া না দিয়ে তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে যান। যেখানে দেখা যায় বল রোহিতের কিছুটা সামনে পড়েছে।

অর্থাৎ, লিটনের ব্যাটে লেগে আসা বলটি আউট হওয়ার আইন অনুযায়ী ধরতে পারেননি রোহিত। এ কারণে লিটনকে নট আউট ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। ফলে বিফলে যায় রোহিতের অভিনয়।

এরপর ধীরে ধীরে ফিফটির পথে এগোচ্ছিলেন লিটন। তবে ২০তম ওভারে এসে দেখেন ব্যর্থতার মুখ। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে লোকেশ রাহুলের তালুবন্দী হন তিনি। টাইগার অধিনায়ক খেলেন ৬৩ বলে ৪১ রানের ইনিংস।

লিটন বিদায় নেয়ার কিছু পরে কোহলির দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে আউট হন ২৯ রান করা সাকিব। এরপর বেশ ধীরগতিতে দেখেশুনে খেলতে থাকেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের রান তোলার গতি ছিল শ্লথ। এর মাঝে আচমকা পরপর দুই বলে সাজঘরে ফেরেন দুজন। শার্দুল ঠাকুরের বলে রিয়াদ লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়লে ভাঙে দুজনের ৬৩ বলে ৩৩ রানের জুটি।

পরের ওভারে মোহাম্মদ সিরাজের করা প্রথম বলে বোল্ড হন মুশফিকুর রহিম। তিনি ৪৫ বলে ১৮ ও রিয়াদ ৩৫ বলে ১৪ রান করেন। দুজনেরই স্ট্রাইক রেট মাত্র ৪০!

ভারতের জোড়া আঘাতের আগেও ম্যাচে খুব ভালোভাবে ছিল বাংলাদেশ। তবে মুশফিক-রিয়াদের ফেরার পরই ব্যাকফুটে চলে যায় টাইগাররা। ব্যক্তিগত ৬ রানে আফিফ হোসেন ফিরলে শুরু হয় স্বাগতিকদের পরাজয়ের অপেক্ষা।

১৩৬ রানে নবম উইকেটের পতন হয়। এ সময় মাত্র ৮ রান করতেই পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপরের গল্পটুকু তো রূপকথা! যেখানে মিরাজ ও মুস্তাফিজের কীর্তি ক্রিকেটভক্তরা মনে রাখবে আজীবন। এমন ম্যাচের সাক্ষী হওয়াও তো ভাগ্যের বিষয়!

ভারতের হতাশার হারের ম্যাচে দলটির হয়ে সিরাজ তিনটি, কুলদীপ সেন ও ওয়াশিংটন সুন্দর দুটি এবং দীপক চাহার ও শার্দুল ঠাকুর একটি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের বোলিং তোপে ১০০ রান পূরণের আগেই ৪ উইকেট হারায় টিম ইন্ডিয়া। দলীয় ১৫২ রানে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে সুন্দরের বিদায়ের পর বেশি দূর যেতে পারেনি ভারত।

ভারতের দীপক চাহারকে শিকার করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মত পাঁচ উইকেট নেন সাকিব। পুরো ১০ ওভার বল করে ৩৬ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে এটিই তার সেরা বোলিং ফিগার।

এছাড়া ওয়ানডেতে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা এবাদত ৮ দশমিক ২ ওভার বল করে ৪৭ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন।

সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন রাহুল। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংসে ৭৩ রান করেন তিনি। রাহুলের ৭০ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কার ইনিংসের সুবাদেই সম্মানজনক স্কোর পায় ভারত।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *