fbpx
হোম জাতীয় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তান আমলের গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে
বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তান আমলের গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে

বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তান আমলের গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে

0

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার যে গোয়েন্দা রিপোর্ট করেছিল তা ১৪ খণ্ডে প্রকাশ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এর দুই খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সময়কালের মধ্যেই সবগুলো খণ্ড প্রকাশিত হবে।

বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

এসময় ১৪ খণ্ডের এই গোয়েন্দা রিপোর্ট ছাড়া বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিকথা‘ ও  চীন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর লেখা বই প্রকাশের উদ্যোগের কথা জানান তিনি।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।

সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশের বর্তমান আইজিপি যখন এসবি’র ডিজি ছিলেন তাকে দায়িত্ব দিলাম। তার সঙ্গে আরও ২২ জনের মতো কর্মকর্তা সহযোগিতা করেছেন।

এ সংক্রান্ত সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা যেসব রিপোর্ট পাঠাতো সেটা আমরা জানতাম। সেজন্য ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর খুঁজে দেখি কোনও তথ্য পাই কী না। দেখলাম ৪৬টি ফাইলের ৪৮ খণ্ড। প্রায় ৪০ হাজারের মতো পাতা। সেগুলো সব নিয়ে ফটোকপি করিয়ে রাখি। এই ফাইলগুলো নিয়ে দিনের পর দিন কাজ করতে থাকি। মরহুম ড. এনায়েতুর রহীম সাহেবও এটা নিয়ে কাজ করেন। দ্বিতীয়বার (২০০৯) যখন ক্ষমতায় আসি ঠিক করলাম এগুলো প্রকাশ করবো। এগুলো টাইপ ও এডিট করার পর ৪০ হাজার পাতা থেকে কমে ৯ থেকে ১০ হাজার পাতার মতো হয়েছে।

তিনি জানান, এখন এটা সম্পূর্ণ তৈরি। হাক্বানী পাবলিশার্স এটা পাবলিশ করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড বের হয়ে গেছে। তৃতীয় খণ্ডও ছাপাখানায় চলে গেছে। চতুর্থ খণ্ডের ডামি আমার কাছে আছে। আমি এটা দেখছি। সম্পাদনা করে আবার পাঠাবো। সেটাও হবে। এভাবে ১৪ খণ্ড করা লাগবে। এক বছরের মধ্যে ১৪ খণ্ড বের করা সম্ভব হবে কী না- চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে আশা করছি যতদূর সম্ভব শতবর্ষ উদযাপনের মধ্যেই ১৪ খণ্ড যাতে বের করা যায়।

দেশের ইতিহাসের জন্য এই গোয়েন্দা রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্ট সব থেকে উল্লেখযোগ্য এই কারণেই যে ইতিহাস থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলেছিল সেই ইতিহাস ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ সালের তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্ট। যে তথ্যটা বের করছি এটা ছিল কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে, তাঁর পক্ষে নয়। তাঁর বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্ট। গোয়েন্দারা তাঁর বিরুদ্ধে কী কী অপপ্রচার করবে এখানে এমনও রয়েছে।

তিনি বলেন, এই প্রকাশনার মাধ্যমে ভাষা, স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান। তিনি কিন্তু অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো তাঁর নামটা সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলা হয়েছিল। স্বাধীনতা আন্দোলন থেকেও তাঁকে মুছে দিয়ে কে কখন ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল সেই কথাগুলো বলা হলো। আর জানি না, পৃথিবীতে কোনও নেতার বিরুদ্ধে লেখা রিপোর্ট কোনও দেশে প্রকাশিত হয়েছে কী না; জানি না, বোধহয় হয়নি। আমি এই উদ্যোগটা নিয়েছি। এর ভেতর থেকে বাঙালি হিসেবে ইতিহাসের সত্য ঘটনাটা উদ্ভাসিত হবে।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকথা বই প্রকাশের উদ্যোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা’র বাইরে আরও কিছু লেখা আছে, তিনি (বঙ্গবন্ধু) নিজেই এর নাম দিয়ে গিয়েছিলেন ‘স্মৃতিকথা‘, সেটা অনেকটাই অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মতো। তবে আরও বেশি সমৃদ্ধ। সেটা ইতোমধ্যে তৈরি করেছি, আমরা ছাপাবো। এর বাংলাটার কাজ হয়ে গেছে। ইংরেজির অনুবাদও হয়ে গেছে। প্রত্যেকটি লাইনের সঙ্গে আমি নিজেই ইংরেজি অনুবাদ মিলিয়ে দেখছি। এছাড়া ‘নিজের জীবনী কথা‘ যা গাফ্ফার চৌধুরী ও মাহবুব তালুকদারসহ কয়েকজন.. জওয়াদুল করিম সাহেবও ছিলেন। তারা উনার (বঙ্গবন্ধুর) কথা রেকর্ড করতেন। গণভবনে কী কী আছে তা খোঁজ করতে করতে আমি ৪টি টেপ রেকর্ড পাই।  আমি আর বেবী (মরহুম বেবী মওদুদ) বসে তার স্ক্রিপ তৈরি করি, লিখি। দেখি এখানে ওনার স্মৃতিকথার সঙ্গে অনেক কথা মিলে যায়। এজন্য স্মৃতিকথার সঙ্গে যেখানে যেখানে সংযুক্ত হয় সেটা করি। স্মৃতিকথাও তৈরি করে রেখেছি। আরও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এটা ছাপাতে দেবো। গোয়েন্দা রিপোর্টের মধ্যে দুই খানা লেখা খাতা ছিল। সেটা তারা বাজেয়াপ্ত করে দিয়েছিল। খোঁজ করতে করতে আমরা একখানা খাতা পেয়েছি। আরেক খানা খাতায় উনার (বঙ্গবন্ধু) হাতের লেখা পেয়েছি অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী একজন বাঙালির কাছে। পরে তার মূল খাতাটাও পেয়ে যাই। স্মৃতিকথার সঙ্গে এটা প্রকাশ করবো সেইভাবেই তা তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ সালে চীন ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন হয়েছিল। তদানীন্তন পাকিস্তান থেকে যে প্রতিনিধি যায় তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবও গিয়েছিলেন। তাঁর ওই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি লিখেছিলেন। সেই বইটাও মোটামুটি তৈরি হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে প্রকাশনার জন্য দিয়ে দেওয়া হয়ে গেছে।

এদিকে বিদেশে থেকেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা নিয়ে প্রশ্নোত্তরে গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যেখানেই থাকি না কেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনগণের ভালোমন্দ দেখার দায়িত্ব আমার। আমি তো আর ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেশ চালাই না। ১২টায় ঘুম থেকে উঠি না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ ঘণ্টা আমার ঘুমের সময়, বাকি সময়টায় আমি সার্বক্ষণিক চেষ্টা করি দেশের কোথায় কী হচ্ছে সেগুলো নজরে রাখার। এটাকে আমি নিজের কর্তব্য বলে মনে করি।

গণফোরামের মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। তিনি সব কিছু ত্যাগ করে এদেশের মানুষকে সুন্দর জীবন দিতে চেয়েছিলেন। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে উন্নয়নের ধারাটা স্তব্ধ হয়ে গেল। এর ভুক্তভোগী হলো বাংলাদেশের মানুষ। আমি তার কন্যা হিসেবে যে কাজ তিনি করতে চেয়েছিলেন। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছিল তা পূরণ করা। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা- এটাই আমার লক্ষ্য। এখানে আমি কী পেলাম বা না পেলাম। আমি কী হলাম না হলাম চিন্তাও করি না। আমার এটা ভাববার সময়ও নেই। আমার সময় দেশকে ঘিরে দেশের মানুষকে ঘিরে, দেশের কল্যাণে। এখানে নিজের জন্য আমার কোনও অনুভূতি নেই। দেশের জন্য কতটুকু করতে পারলাম সেটা ভাবনা। আর বিশ্ব নেতা আমি না। আমি অন্তত: এটুকু বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *