নিজের জমিতে ঘর তুলতেও চাঁদা দিতে হয়: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, ‘প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। আজ একটির দাম বেশি, কাল অন্যটির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতিদিন মানুষের ব্যয় বাড়ছে কিন্তু আয় বাড়ছে না। প্রতিদিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু কর্মসংস্থান বাড়ছে না। দেশের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ’
‘অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নেই, সামাজিক নিরাপত্তা নেই, সড়কে বের হলে জীবনের নিরাপত্তা নেই, স্বামী ও সন্তান নিয়ে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হচ্ছেন নারী, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। নিজের ঘরেও মানুষের নিরাপত্তা নেই। এখন নিজের জমিতে ঘর তুলতেও চাঁদা দিতে হয়। মানুষ জানে না, কার কাছে গেলে কী সমাধান পাওয়া যায়।’
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভার উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। দেশের কোথাও জবাবদিহিতা নেই। পরতে পরতে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে, প্রতিদিনই দুর্নীতি বাড়ছে দেখার যেন কেউ নেই। এভাবে চলতে পারে না, দেশের মানুষ এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়।’
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে বিশ্ব দুই ভাগ হয়ে পড়েছে। যুদ্ধের জন্য অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। যুদ্ধের এই বিরূপ প্রভাবের ঢেউ বাংলাদেশের রাজনীতিতেও লেগেছে। তাই দেশের রাজনীতি কোন পথে যায় নিশ্চিত করে বলা যায় না। দেশে রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা মাত্র তিনটি দলের রয়েছে, তারমধ্যে জাতীয় পার্টি অন্যতম। তাই আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির সম্ভাবনা আছে। আর এজন্যই দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। জাতীয় পার্টি সংগঠিত হয়ে গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দেবে।
জিএম কাদের বলেন, রওশন এরশাদ এখন অনেকটা সুস্থ। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হতে না পারলেও আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করতে পারবেন। জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাবে। যারা জাতীয় পার্টির ঐক্য বিনষ্ট করতে অপচেষ্টা চালাবে, তারা কখনোই সফল হবে না।
এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ‘দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। দুর্নীতি, দুঃশাসন আর সরকারি দলের কর্মীদের অত্যাচারে দেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকার বলে অনেক উন্নয়ন করেছে, অথচ টাকা দিয়ে টিকিট কিনে মানুষ গণপরিবহণে উঠতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি আর কোনো জোটে নেই। আমরা স্বতন্ত্র রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাব। সব অত্যাচার ও নির্যাতন উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টি গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সক্রিয় থাকবে। তিনশ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে চলছে জাতীয় পার্টি।’