তিস্তা পাড়ের মানুষের দু:খ কাটলোনা আজও
তিস্তা পাড়ের মানুষদের দু:খ যেনো আজও কাটলোনা। বছরের পর বছর এই কষ্ট বয়ে বেড়াতে হয় তিস্তা পাড়ের মানুষদের।
প্রতি বছরের ন্যায় আবারও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের ভাটিতে থাকা চার উপজেলার ১৫ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে তলিয়ে গেছে ধান, ভুট্টা, বাদাম, সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষেত।
এদিকে, তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি সকাল ৬টা থেকে ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে সকাল ৯টায় পানি কিছুটা কমে ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড দোয়ানী-ডালিয়া কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। শনিবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার রেকর্ড করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই অবস্থা কুড়িগ্রামে। গত কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে করে কুড়িগ্রামে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুদিনে জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের দুটি গ্রামের ১৫-২০টি বাড়িঘরসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে নদী তীরবর্তী মানুষ তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
তিস্তা নদীর পানি পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলসহ অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে আবাাদি জমিও তলিয়ে গেছে। ভাঙনের তীব্রতায় নদী তীরবর্তী মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিস্তার পানির প্রবল স্রোতে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা ও পাড়ামলা এলাকায় তিস্তা নদীর তীর প্রচণ্ড ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে চরম আতঙ্ক ও দুর্ভোগে দিন কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষের।
ইতোমধ্যে নদী তীরবর্তী প্রায় ১০-১২ বিঘা আবাদি জমিও বিলীন হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। হুমকির মুখে রয়েছে ওই এলাকার কালিরহাট বাজারসহ কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও অসংখ্য ঘরবাড়ি। ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এলাকাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এলাকাবাসীর অভিযাগ, নির্বাচনের সময় এমপিরা নদী খনন এবং ভাঙন রোধে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও সময়মতো তাদের দেখা যায় না। গত বছর কিছু জিও ব্যাগ ফেললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, এ সময় পানি বৃদ্ধি, বন্যা ও ভাঙন দেখা দেয়। জরুরি ভিত্ততে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।