fbpx
হোম জাতীয় জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিশেষ বরাদ্দ দাবি এনআইবির
জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিশেষ বরাদ্দ দাবি এনআইবির

জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিশেষ বরাদ্দ দাবি এনআইবির

0

আসন্ন জাতীয় বাজেটে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিশেষ বরাদ্দ এবং কৃষক ও প্রকৃত উদ্যোক্তাদের সুদমুক্ত ঋণ প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট অব বাংলাদেশ (এনআইবি)।

এনআইবির সম্পাদক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

সংগঠনের সম্পাদক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে। বিগত আড়াই মাসে বদলে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও শ্রেণিকাঠামো। করোনাভাইরাসে আক্রান্তসহ সাধারণ রোগী ন্যূনতম চিকিৎসা সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে, বেকার লাখ লাখ প্রবাসী দেশে ফিরে আসছে, কর্ম হারিয়ে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় ৪০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরকম একটি অবস্থায় সরকার ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য জাতীয় বাজেট উত্থাপন করতে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে, ‘ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট অব বাংলাদেশ (এনআইবি)’ দাবি জানাচ্ছে, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ভেঙে পড়া স্বাস্খ্য ব্যাবস্থা ও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাওয়া অর্থনীতিকে টেনে তোলা। বাজেটে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা উচিত। বিশেষ বরাদ্দ দেয়া উচিত স্বাস্থ্য খাতে, কৃষক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিনা সুদে ঋণ দেয়া এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বৃদ্ধি করা দরকার বলে আমরা মনে করি।

২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেট প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট যে বিষয়গুলো বিবেচনার দাবি জানাচ্ছে এনআইবি, তা হলো-
১. করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভঙ্গুর চিত্র ফুটে উঠেছে। আমরা মনে করি, স্বাস্থ্যখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই খাতে জাতীয় বাজেটের ১৫ শতাংশএবং জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। জরুরি তহবিল গঠন করে আপদকালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মতে, ডাক্তার, চিকিৎসক এবং টেকনোলজিস্টের অনুপাত মেনে দক্ষ জনশক্তির দ্রুত নিয়োগ এবং অবকাঠামো বাড়াতে হবে। সকল নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু করতে হবে।

২. লকডাউনের ফলে পণ্য বিপণন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া, পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া-সহ নানান সংকটে রয়েছে দেশের কৃষিখাত। এ অবস্থায় এই খাতের উন্নয়নে কৃষকদের বিনা সুদে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ সুবিধা প্রদান-সহ কৃষি উপকরণ, বাজারজাতকরণ ও কৃষির বহুমুখীকরণে ভর্তুকির যথযাথ ব্যবহার করা উচিৎ। এর পাশাপাশি শক্তিশালী পণ্য পরিবহন ও বিপণন ব্যবস্থার কাঠামো দাঁড় করানো এবং ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রির পরিবেশ নিশ্চিত করা দরকার।
৩. বিগত কয়েক বছরে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় ব্যাপক হারে বেড়েছে। অন্যদিকে করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ায় কমেছে মানুষের আয়। কিন্তু সেই হারে দেশের করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হয়নি। আমরা মনে করি, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আগামী বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে চার লাখ টাকা করা দরকার।
৪. করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আয়ের পথ শুধু রুদ্ধই হয়নি, তাদের পুঁজিও প্রায় শেষ। এছাড়া দেশে ফিরে প্রবাসীদের একটি বড় অংশ এবং দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাই এসব কর্মহীনদের জন্য বিনা সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বা এককালীন অনুদান ও দক্ষতা উন্নয়নে সার্বিক সহায়তা দেয়া দরকার।
৫. করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা কার্যক্রম। আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমও চালিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব থেকে পিছিয়ে পড়ছে। তাই অনলাইনভিত্তিক অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধি ও মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় বাজেটের ন্যূনতম ১৫ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয়া দরকার।
৬. করোনার এই সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে বরাদ্দ এবং সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। এই খাতে পেনশন ও শিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দিন আনে দিনে খায় এমন মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে হবে। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন সেটি বাস্তবায়নে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য কমেছে। তাই গণপরিবহনে ব্যবহৃত জ্বালানির দাম হ্রাস এবং বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবি জানাচ্ছি আমরা।
৮. সব ধরনের পরিবেশ দুষণ রোধে দ্রুত দূষণ করারোপ এবং বায়ুদূষণ কমাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ইলেক্ট্রিক যানবাহন ব্যবহারে প্রণোদনা প্রদান করা হোক।
৯. দুর্নীতি কমাতে সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা দেখানো এবং রাজস্ব সংগ্রহে ঘাটতি মোকাবেলায় দুর্নীতির মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো জরুরি।
১০. বাজেট ব্যবস্থাপনা, অর্থ বরাদ্দ ও প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতা বাড়ানো এবং অর্থ ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার বলে আমরা মনে করি।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *